গভীর রাতে হলদিয়া বন্দরের লক্ষ লক্ষ টাকার কয়লা চুরি হচ্ছিল। বাদা দিতে গেলে সিআইএসএফ জওয়ান ও আধিকারিকদের উপর পাথর ছুড়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার কথা জানিয়ে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আর তার জেরেই সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী গত কয়েক দিন ধরে তাঁর গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন হলদিয়ার সাংসদ।
সাংসদকে ফোনে নানারকম ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে ভারত সরকার তার নিজস্ব এজেন্সি মারফত তথ্য সংগ্রহ করছে ইতিমধ্যে। কয়লা চুরি সহ এসব নিয়ে হলদিয়া পুলিশ কিছুই করতে পারছে না। রাজ্যজুড়ে কয়লা চুরি নিয়ে শোরগোলের মাঝখানে ফের নতুন করে হলদিয়া বন্দরের কয়লা চুরি সহ সাংসদের উপর এই ধরনের হামলার ছকের অভিযোগে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সাংসদ জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে সমন্বয়ের অত্যন্ত জরুরি। তাঁর অভিযোগ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষীদের বেষ্টনীতে থাকেন কিন্তু সেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীরা যেখানে আক্রান্ত হচ্ছেন, গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে, তখন রাজ্য পুলিশ কিছুই করছে না।
সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, 'সাংসদ হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি। আর সে কথা বলার পরেই আমাকে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্রাণে মেরে ফেলা হবে। বলা হচ্ছে আমার গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। যত দিন সাংসদ থাকব তত দিন হলদিয়া গিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করব।'
উল্লেখ্য গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি গভীর রাতে ৪০ থেকে ৫০ জন দুষ্কৃতি হলদিয়া বন্দরের কয়লা চুরি করছিল। ওই সময় নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জোয়ানদের নজরে আসে। এরপর জোয়ানরা সিআইএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডারকে খবর দেয়। কমান্ডার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বাহিনী নিয়ে দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করতে গেলে কেন্দ্র বাহিনীর জওয়ানদের উপর ও তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ব্যাপক পাথর ছোড় হয় রাতের অন্ধকারে। পাথরের আঘাতে গুরুতর জখম হন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার সহ বেশ কয়েকজন জওয়ান। পরে তাদেরকে হলদিয়া পোর্ট হসপিটালে ভর্তি করা হয়। হলদিয়া থানায় এই নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু প্রায় একমাস কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোন কিছুই করছে না।
দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি স্কুটি ও মোটরসাইকেল ঘটনাস্থলে ফেলে পালিয়েছিল। সেই দুটো বাইক পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলেও তারা কিছুই করতে পারছে না বলে অভিযোগ। কয়লা জাতীয় সম্পদ, তাকে রক্ষা করার প্রয়োজন। সেই সম্পদ চুরি হওয়ার এমন ঘটনা শুধু হলদিয়া নয়, বাংলার কাছে লজ্জা জনক-বলে দাবি সাংসদের।
এছাড়া হলদিয়া গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এলাকা, কোস্ট গার্ড রয়েছে, কোস্টগার্ডের ডিআইজি সেখানে বসেন, সমুদ্রসহ হলদি নদী রয়েছে, জাহাজ যাওয়া আসা করছে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য নিয়ে। সেই জায়গায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম যথেষ্ট কপালে ভাঁজ ফেলছে। উপকূলে পুলিশের ভারত সরকারের দেওয়া এফআরবি বোট রয়েছে, কিন্তু তা ব্যবহার হচ্ছে না, পেট্রোলিং করছে না পুলিশ। জল পথে যে কোন সময় হামলা হতে পারে। কোস্টাল সিকিউরিটি নিয়ে চিন্তিত সাংসদ।