বিধায়ক, সাংসদদের দলবদল যেন বঙ্গ রাজনীতির সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। গত এক দশকের এই প্রবণতায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে। দলবদলই যেন এ রাজ্যের শাসক ও বিরোধী রজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতা জাহিরের মাধ্যম। বাংলায় দলবদলু বিধায়কদের তালিকায় নবতম সংযোজন সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস। তাঁর কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলে নাম লেখানোয় চরম উল্লসিত তৃণমূল শিবির। এসবের মধ্যেই অবশ্য দলবদলের সংস্কৃতিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলেরই বারাসতের বিধায়ক অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। বিধায়ক, সাংসদদের দলবদলকে 'লোক ঠকানো' বলে তোপ দেগেছেন তিনবারের এই তৃণমূল বিধায়ক।
আদর্শ রাজনীতির পক্ষে সওয়াল করেছেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। বায়রন বিশ্বাসের দলবদল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'এভাবে দলবদল করা আমি পছন্দ করি না। এটা লোক ঠকানো। মানুষ তো তাঁকে একটা প্রতীক দেখে ভোট দিয়েছেন। তিনি যদি দলবদল করেন তাহলে আসলে মানুষকেই অপমান করা হয়।'
২০১৯ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা আসন থেকে জিতে ২০২২ সালের মে মাসে ফের তৃণমূলে যোগ দেন সাংসদ অর্জুন সিং। দলবদল করলেও বিজেপির প্রতীকে জয় পাওয়া সাংসদ পদ ছাড়েননি তিনি।
একই উদাহরণ বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের ক্ষেত্রেও। পদ্ম প্রতীকে জিতে বর্তমামে ঘাস-ফুলে ঠাঁই নিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বারাসতের তৃণমূল বিধায়ক অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, 'একজন একটা দলের এমপি। তিনি আবার অন্য দল করছেন। এটা হয় কী করে?'
২১ সালের বিধায়রসভা ভোটের পর বিজেপির ছয়'জন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কেউ-ই অবশ্য ইস্তফা দেননি। ফলে বিধায়নসভার অন্দরে এখনও তাঁরা বিজেপির বিধায়ক। যদিও মুকুল রায় সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়েছিলেন। দাবি করেছেন, তিনি বিজেপিতেই আছেন।
এই প্রবণতার উজ্জ্বল ব্যতিক্রম অবশ্যই বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আসানসোলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তারপর আসানসোলে উপনির্বাচনে হয়। জেতেন তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিনহা। পরে বাবুল সুপ্রিয়ও বালিগঞ্জে উপনির্বাচনে জয় পান। বর্তমানে তিনি মমতা মন্ত্রিসভায় পর্যটন দফতরের মন্ত্রী।