Advertisment

করোনাতঙ্ক কাটিয়ে খুলছে স্কুল-কলেজ, কী ভাবে দেখছেন শিক্ষাঙ্গনের সঙ্গে যুক্তরা?

কী পদ্ধতিতে কত পড়ুয়া নিয়ে স্কুল, কলেজ খুলবে তা রাজ্য সরকার এখনও জানায়নি। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ঘিরে অনেক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে, যা মূলত শিশু পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত।

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
Hs will start from saturday

শনিবার ২রা এপ্রিল থেকে শুরু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা

বহুদিনের প্রতীক্ষার অবসান। অবেশেষে স্কুল, কলেজ খোলার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। কোভিডবিধি মেনে ১৫ নভেম্বর থেকে খুলছে স্কুল, কলেজ। যা নিয়েই শিক্ষাক্ষেত্রের নানা মহলে জোর গুঞ্জন।

Advertisment

উৎসবে ছাড় ছিল, তাহলে কী কারণ এতদিন খোলা হচ্ছিল না রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? এই প্রশ্ন তুলেই সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন ছাত্র সংগঠন থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। ক্রমাগত স্কুল বন্ধের ফলে বিচলিত ছিলেন পড়ুয়া, অভিভাবকরা। অবশেষে সব জল্পনার ইতি। ২০ মাস শেষে ফের শিক্ষা প্রাঙ্গণের তালা খোলার পথে। কীরকম প্রতিক্রিয়া শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সকলের?

এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীর ফের স্কুল, কলেজ খোলার ঘোষণায় সংগঠনের নৈতিক জয় দেখছেন। তাঁর কথায়, 'সকলের সঙ্গে মিলেমিশে চিকিৎসক থেকে ছাত্র সংগঠন, প্রয়োজনে পঠন-পাঠনেরর ক্ষেত্রে বদল আনতে হবে। প্রশ্ন আছে সিলেবাসের সঙ্গে পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং ড্রপ আউটের সংখ্যার। বিশেষ করেই মেয়েদের মধ্যে এই দিকগুলি বিবেচনা করা উচিত। এককথায় লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সাবলীলতা আনতে অনেক নতুন প্ল্যানিং প্রয়োজন। তারপরেই আদৌ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো উচিত কিনা তা বলা যাবে।'

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, 'দিদির নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হতে একেবারেই সময় নেবে না। স্কুল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যাবে সাহায্যের হাত। বিল্ডিং স্যানিটাইজ করে তারপরেই শুরু হবে পঠন-পাঠন, খুশি সকলেই। পুনরায় সব ঠিক হতে চলেছে।'

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের অনেকেই স্কুল খোলার বিষয়ে আশাবাদী, আবার অনেকে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুলের শিক্ষিকা সোহাগ কানুনগো বলেন, 'শিশুদের ক্ষেত্রে বেশ অসুবিধে কারণ ভ্যাকসিন শুরুই হয়নি। তবে স্কুলে না এসে এসে ওরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। নবম কিংবা একাদশের ক্ষেত্রে এই সমস্যা নেই, কারণ ভাইরাসের প্রকোপ সম্পর্কে ওরা জ্ঞাত । স্কুল খোলা দরকার তবে তার জন্য প্ল্যানিং প্রয়োজন।' ভারতীয় বিদ্যাভবনের শিক্ষিকা অবন্তিকা সেনের বক্তব্যে সমাজের স্বার্থপরতার বিষয় পরিষ্কার। বললেন, 'অবশ্যই স্কুল খোলার প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু তার আগে ভ্যাকসিনের দরকার ছিল। গ্রামে-গঞ্জের ছেলে মেয়েদের খুবই অসুবিধে হয়ছে। তবে তার থেকে বেশি সমস্যার, উৎসবের মরশুমে মানুষের বাঁধন ছাড়া আনন্দের রেশ বর্তমানে শিশুদের উপর পড়ছে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলো নিয়ে উদ্বেগ থাকছেই। যদিও সরকারের ওপর ভরসা রাখতে হবে।'

জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যাপক শ্রী আবির চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে স্কুলের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের ভ্যাকসিনেশন একেবারেই শুরু হয়নি। কলেজের ক্ষেত্রে এই সমস্যা নেই, আর নতুন ছাত্রছাত্রীদের কলেজ ক্যাম্পাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন। কলেজের পরিকাঠামোর উন্নয়ন অবশ্যই তৎপরতার সঙ্গে শুরু হবে, তাই নির্দ্বিধায় এই নির্দেশকে স্বাগত।'

রয়েছে ভিন্নমতও। মণীন্দ্র কলেজের অধ্যাপক শ্রী বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, 'শিক্ষার সঙ্গেই স্বাস্থের দিকে তাকানো প্রয়োজন। দরকার পড়লে ক্লাসে অর্ধেক পড়ুয়া নিয়ে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চাদেরকে বাড়িতেও মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার নিয়ে সচেতন করতে হবে। সুরক্ষা নিশ্চিত করাই অগ্রাধিকার হওয়া দরকার।" সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান শ্রীমতি মৃণাল পারেখ নতুন এক শিক্ষা ব্যবস্থার ধারণা দিয়ে বলেন, 'তিনদিন অনলাইন এবং তিনদিন অফলাইন। এই পদ্ধতি মেনে ক্লাস হলে ভাল হয়।'

কী পদ্ধতিতে কত পড়ুয়া নিয়ে স্কুল, কলেজ খুলবে তা রাজ্য সরকার এখনও জানায়নি। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ঘিরে অনেক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে, যা মূলত শিশু পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Education West Bengal School Reopening college
Advertisment