বঙ্গ রাজনীতি তাঁকে অনেকেই 'চাণক্য' বলে সম্বোধন করেন। সেই মুকুল রায় দিল্লি যেতেই বাংলার রাজনীতিতে হইচই শুরু হয়েছে। আপাতত কোন ফুলে রয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক? এনিয়ে অকপট মুকুল রায়। পাশাপাশি রাজধানীতে বসে তৃণমূল সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন একদা জোড়-ফুলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।
কী বলেছেন মুকুল রায়?
সোমবার রাতে দিল্লিতে পৌঁছান মুকুল রায়। তাঁর পুত্র শুভ্রাংশুর অভিযোগ ছিল, মঙ্গলবার সকাল থেকে মুকুল নাকি নিরুদ্দেশ ছিলেন। শুভ্রাংশুর অভিযোগ ছিল, মুকুল রায় মানসিকভাবে সুস্থ নন, তাঁকে নিয়ে কোনও একটি রাজনৈতিক দল টাকার খেলা খেলছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হেয় প্রতিপন্ন করতেই নাকি এত কাণ্ড। মুকুল অবশ্য নিজেকে সুস্থ বলেই দাবি করেন। সাফ বলেছেন, 'আমি বিজেপিতে ছিলাম, আছি, থাকব।'
তাহলে একুশের বিধানসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম শিবিরের পরাজয়ের পর কেন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক? জবাবে 'চাপ' তত্ত্ব খাড়া করেছেন বঙ্গ রাজনীতির 'চাণক্য'। মুকুল রায় বলেন, 'কয়েক ঘন্টার জন্য একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় স্ত্রী, নিকট আত্মীয়ের বিয়োগ ঘটেছিল। মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না, চাপ ছিল। তাই তখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই তৃণমূল গঠনের নেপথ্যে সক্রিয় ভূমিকা ছিল মুকুল রায়ের। এরপর দীর্ঘ লড়াই, বাংলায় ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তারপর একযুগ অতিক্রান্ত। বাংলা জয়ে জোড়-ফুলের হ্যাটট্রিক সম্পন্ন। তবে বর্তমানে সেই তৃণমূলই নিয়োগ দুর্নীতি, আবাসন কেলেঙ্কারির মত অভিযোগে বিদ্ধ। দলের তিন বিধায়ক ও একাধিক নেতা জেলে। আরও এক বিধায়ক সিবিআইয়ের তদন্তের মুখোমুখি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে কী নজরে দেখছেন একদা দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড?
মুকুল রায় বলেন, 'তৃণমূল আর সেই জায়গায় নেই। যেসব কাজ করেছে তা বাংলার জন্য ভাল নয়। এর খেসারত দিতে হবে।'
বিজেপি নেতৃত্বের থেকে কাজ চেয়েছেন মুকুল। বাংলার রাজনীতি নিয়ে এখন কী চাইছেন তিনি? মুকুল রায় বলেন, 'এখন বাংলায় অশুভ অবস্থা চলছে। ভোট যখন করব, লড়াই যখন করব তখন পরিবর্তন তো চাইব-ই।'
মুকুল রায়ের দাবি, 'আমি এখন পুরো ফিট। সার্টিফিকেট দেখাতে পারব। শুভ্রাংশুর সঙ্গেও কথা হয়েছে। আজ সকালেও কথা বলেছি।' পরে মুকুল-পুত্র বলেছেন, 'পুলিশের মাধ্যমে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কী আমায় জানিয়ে দিল্লি গেছ? বাবা বলেছেন না। জিজ্ঞাস করেছি তুমি যা বলছ সজ্ঞানে বলছো তো? উনি বলেছেন হ্যাঁ।'