বিমান নামার ৩০-৪০ মিনিট আগে প্রবল ঝাঁকুনি হয়। সঙ্গে সঙ্গে সিট বেল্ট লাগিয়ে নিই। তবে বিমানের সব যাত্রী অবশ্য সিট বেল্ট লাগাতে পারেননি। জাম্পিং বলের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি প্রায় শেষ সিটে বসেছিলাম। জাম্পিং বলের মতো লাফাচ্ছিলেন যাত্রীরা। তাঁদের মধ্যে তিন-চারজন বাচ্চাও ছিল।
অত তাড়াতাড়ি ওরা সিট বেল্ট পড়তে পারেনি। বেশি ঝাঁকুনি হতেই আমি হ্যান্ডব্রেক ধরে নিই। আমার সামনের এক মহিলা বারবার আমার পায়ের উপর পড়তে থাকেন। সিট বেল্ট যাঁরা লাগাতে পারেননি তাঁরা রীতিমতো টেনিস বলের মতো এদিক-ওদিক ধাক্কা খেয়েছেন। ৩০-৩৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। কারও পা কারও কোমর কেউ মাথায় চোট পেয়েছেন। বিমানের সব আসনই পূর্ণ ছিল। বিমানের পাইলট ও গোটা ক্রু-কে ধন্যবাদ। এত কিছু পরেও নিরাপদে ওঁরা বিমান নামিয়েছেন।
প্রায় ১৫-১৮ মিনিট ধরে ভয়ঙ্কর ওই পরিস্থিতি হয়েছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে আমরা আর নামতে পারব না। হয়তো এখানেই শেষ। এখনও ভাবলে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।
এয়ারপোর্ট অথরিটির গাফিলতি মেনে নেওয়ার মতো নয়। বিমানবন্দরে নামার পর ওঁরা শুধু ব্যথার ওষুধ দিয়েছেন। ওখানে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকেছে ৮টা ১৫ মিনিটে। এদিকে বিমানটি ৭টা ১৫ মিনিটে নেমেছে। বিমানবন্দরে সেই সময় অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক ছিল না। এক ঘণ্টা আগে খবর পেলেও ওঁরা চিকিৎসক, অ্যাম্বুল্যান্স আনতে পারেননি। বিমান নামার ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকেছে। বিমানবন্দরে ততক্ষণে মানুষগুলো অসহ্য ব্যথা নিয়ে কাতরাচ্ছিলেন। ওরা কোনও সহযোগিতা করেনি। শুধু লাল ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়েছে।