দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এক কর্মী খুন হয়েছেন দিন কয়েক আগেই। বর্ধমানের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলকর্মী অশোক মাঝি খুনে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত দলেরই অপর নেতা আব্দুল রব। যদিও এখনও এই ব্যক্তি গ্রেফতার হননি। খুনে অভিযুক্ত আব্দুল রবকে শনিবার দেখা গেল এলাকারই বিধায়কের পাশে। বিধায়ক খোকন দাসের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাকে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে।
মঙ্গলবার বর্ধমান শহরে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী অশোক মাঝির। বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী করেন দলীয় বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাস ও তাঁর অনুগামী তথা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক শিবশংকর ঘোষের অনুগামীদের। দায়ের হয় এফআইআর। অশোক মাঝির মৃত্যুর ঘটনায় বুধবারই পুলিশ তিন মহিলা সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছিল। পরে বর্ধমান শহরের তৃণমূল নেতা শিবশংকর ঘোষকেও পুলিশ গ্রেফতার করে।
অশোক মাঝি খুনে অভিযুক্ত তৃণমূলের আর এক নেতা আব্দুল রব। দলের কর্মী খুনে পাঁচজন গ্রেফতার হলেও অভিযুক্ত হয়েও আব্দুল রবের নাগাল পায়নি পুলিশ। শনিবার দলেরই দুটি কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে দেখা গেল তাঁকে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শিবশংকর ঘোষ সহ পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অভিযুক্ত দলের দুই নেতা ইফতিকার আহমেদ ওরফে পাপ্পু ও আব্দুর রব অধরা। অবশ্য এদিন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে রব দলের পতাকা উত্তোলন করেন।
বর্ধমান শহরেরই ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রক্তদান শিবিরেও আব্দুল রবকে বিধায়ক খোকন দাসের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় শনিবার। এই অভিযুক্ত বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির শহর কনভেনর কল্লোল নন্দন বলেন, “একজন লোক খুন হয়েছেন। তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। প্রশাসন নির্বিকার হয়ে দেখে যাচ্ছে। তাদের উচিত যথাযথ তদন্ত করে গ্রেফতার করা।”
আরও পড়ুন- কয়লাকাণ্ডে সমন অভিষেককে, ‘নিরপেক্ষ তদন্তে ভরসা আছে’ প্রতিক্রিয়া বিজেপির
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “এটা দলের কোনও অভিযোগ ছিল না। নিহতের পরিবার এই অভিযোগ করেছে। নিহত তৃণমূল কর্মী। সেখানে দলের জেলা সভাপতি সহ অন্যরা গিয়েছিলেন।পুলিশ পুলিশের মত করে তদন্ত করছে।এতে আমাদের বলার কী ই বা থাকতে পারে? পুলিশ যেভাবে মনে করবে তদন্ত সেভাবেই চলবে। আইন আইনের পথেই চলবে।”
প্রসঙ্গত, তৃণমূলকর্মী অশোক মাঝি খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে তৃণমূল নেতা শিবশংকর ঘোষ-সহ পাঁচজন। শিবশংকর ঘোষ বিধায়ক খোকন দাসের অনুগামী বলে পরিচিত। বুধবার রাতে স্পেশাল অপারেশন টিম শক্তিগড় থেকে শিবশংকরকে গ্রেফতার করে। অশোক মাঝির স্ত্রী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিমের পক্ষ থেকে করা অভিযোগপত্রে শিবশংকর ঘোষ, অন্য আর এক প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব ও প্রাক্তন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদকে মূল অভিযুক্ত বলা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন