লকডাউনে স্তব্ধ হয়েছে সব শিল্প। তবু পরিস্থিতি বিচার করে দ্বিতীয় দফার লকডাউনে বিড়ি শিল্পের কাজ চালু রাখার ছাড় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই ছাড়ের দিন পেরোলেও এখনও খোলেনি বিড়ি শিল্পের কারখানা। এমতাবস্থায় ঘোর সংকটে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকেরা।
এক করোনাভাইরাসের দাপটে জীবন গৃহবন্দি হয়েছে রাজ্যবাসীর। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বেশ কিছু শিল্পে ছাড় দেওয়া হলেও চরম অনিশ্চয়তার মুখে বিড়ি শ্রমিকদের জীবন। হাতে গোনা কয়েকজন কাজ পেলেও বেশিরভাগ শ্রমিকের ঘুম উড়েছে জীবিকা নির্বাহের চিন্তায়। অরঙ্গাবাদের ফিরদৌসী বিবি হোন কিংবা জঙ্গিপুরের নাসেরা খাতুন, বিড়ি বেঁধেই তাঁরা সংসার চালিয়ে এসেছেন এতদিন। দিনের সেই রোজগার এবার লকডাউনের গ্রাসে।
কীভাবে চলবে জীবন? বিড়ি শ্রমিকদের একটাই প্রশ্ন। ছবি- পরাগ মজুমদার
তবে এই দুশ্চিন্তা শুধু সাবিনা বা ফিরদৌসী বিবির নয়, মুর্শিদাবাদের ১০ লক্ষেরও বেশি বিড়ি শ্রমিকের মনে এখন সেই জীবন চালানোর প্রশ্নই ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান বা সামশেরগঞ্জেও চিত্রটা কমবেশই একই। রঘুনাথগঞ্জের সাবিনা বিবি জানিয়েছেন যে তাঁর স্বামী বাইরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। সাবিনা বিড়ি বাঁধতেন। স্বামী-স্ত্রীর টাকায় ভালোভাবেই চলে যেত সংসার। কিন্তু লকডাউনের পর কোনও রকমে বাড়ি ফিরেছেন তাঁর স্বামী। অন্যান্য বার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও এবার তাঁর হাত ফাঁকা। এদিকে সাবিনারও কাজ নেই।
এখনও রয়ে গিয়েছে মজুত বিড়ি! ছবি- পরাগ মজুমদার
লকডাউন হওয়ার পর থেকে কাজ বন্ধ। বাইরে বিড়ি যাওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকে মুদির দোকানে ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু কতদিন? রেশনে চাল বা গম পাওয়া যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রান্না করতে গেলে অন্যান্য সামগ্রীরও দরকার হয়, যা কেনার সামর্থ্যও তাঁদের নেই। বিড়ি সংস্থাগুলির দাবি, এখনও তাঁদের কাছে প্রচুর পরিমাণ তামাকজাত দ্রব্যাদি মজুত রয়েছে। লকডাউনে তা বাইরে পাঠানোও যাচ্ছে না। সেই কারণেই সকলকে কাজ দিতে পারছেন না তাঁরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন