মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সপরিবারে স্কুল শিক্ষককে খুনের ঘটনায় ২ জনকে আটক করল পুলিশ। যদিও এখনও আটকদের নাম-পরিচয় কিছুই জানায়নি পুলিশ। ধৃতদের এই মুহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, নিহত স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের সঙ্গে সাগরদিঘির সাহাপুর গ্রামে স্বপন কর্মকার নামে এক গাড়িচালকের সখ্য গড়ে ওঠে। পরে তাঁর সঙ্গে ব্যবসার কারণে কিছু আর্থিক লেনদেনও শুরু হয়। এক্ষেত্রে তাই স্বপন কর্মকারকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জকাণ্ড: ‘বন্ধু শুধু আমাদের, আর কারোর নয়’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের আগে মাদক জাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়েছিল ওই স্কুল শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে। অভিযুক্তরা নিহতদের পূর্ব পরিচিত বলে মনে করা হচ্ছে। এও জানা যাচ্ছে যে স্কুল শিক্ষকতার পাশাপাশি বেশ কিছু ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বন্ধুপ্রকাশ। টাকা-পয়সার বিবাদের জেরেই গোলমাল হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ঘটনাস্থল থেকে নোট ও ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব দেখে পুলিশের অনুমান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও পারিবারিক সমস্যা ছিল।
আরও পড়ুন: ‘ম্যাডাম মুখ্যমন্ত্রী, অপরাধীদের যেন বিচার হয়’, জিয়াগঞ্জকাণ্ডে মমতাকে টুইট বার্তা অপর্ণা সেনের
বিজয়া দশমীর উচ্ছ্বাসের মাঝে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ শহরে বাড়ির ভিতরে স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর সন্তান সম্ভবা স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল ও তাঁদের নাবালক ছেলে অঙ্গন পালকে খুনের ঘটনায় এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি থেকে সোশাল মিডিয়া। মুর্শিদাবাদের বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষের দাবি, “ব্লু-প্রিন্ট বানিয়ে ওই আরএসএস কর্মীর পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ৭২ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আমরা এবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছি’’।
আরও পড়ুন: বাংলায় ‘নারকীয় হত্যালীলা’! জিয়াগঞ্জকাণ্ডে মমতাকে তোপ গম্ভীরের
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপালের এহেন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সরব হয়েছে তৃণমূল শিবির। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের পদে থেকে রাজ্যপালের এই মন্তব্য অনুচিত।
জিয়াগঞ্জকাণ্ডের প্রেক্ষিতে টুইট করে অপর্ণা লিখেছেন, ‘‘আরএসএস কর্মী, তাঁর অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী ও তাঁর সন্তানকে খুন করা হয়েছে আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গে! এ ধরনের জঘন্য ঘটনার যাই কারণ থাকুক না কেন, এটা আমাদের কাছে লজ্জার! ম্যাডাম মুখ্যমন্ত্রী, অপরাধীদের যাতে বিচার হয়, সে ব্যাপারটি দয়া করে নিশ্চিত করুন। রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে পশ্চিমবঙ্গের সব নাগরিক আপনারই দায়িত্বে। আপনি সকলের মুখ্যমন্ত্রী’’।