Advertisment

বিজয়া দশমীতে বিষাদের ছায়া, নারকীয় হত্যালীলায় খুন এক পরিবারের তিন

ঘটনার বীভৎসতায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
murshidabad triple murder, father, mother, son

একদিকে উমার বিদায় বেলায় যখন বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে, তখন এক রোমহর্ষক নারকীয় ঘটনার সাক্ষী হলো মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ। বাড়ীর ভিতর থেকে এক এক করে স্কুল শিক্ষক গৃহকর্তা সহ তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও পুত্র মিলিয়ে মোট তিনজনকে বীভৎসভাবে খুন করে পালালো অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। মৃত বন্ধুপ্রকাশ পাল (৩৫), স্ত্রী বিউটি মন্ডল পাল (৩০) ও তাঁদের বছর ছয়ের ছেলে বন্ধু অঙ্গন পাল।

Advertisment

ঘটনার বীভৎসতায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। পুরো ঘটনার মোডাস অপেরান্ডি নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। জেলা পুলিশ মহলের কর্তারা এই নারকীয় খুনের কিনারায় কোমর বেঁধে নেমেছেন। এই ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার এদিন সন্ধ্যায় প্রাথমিকভাবে বলেন, "এখনই ঘটনার কারণ স্পষ্ট নয়, তবে কোনও দামী অলঙ্কার বা টাকাপয়সা খোয়া বা চুরি যায়নি। সেক্ষত্রে পূর্বের চেনা-পরিচিত কেউ এই ঘটনার সাথে যুক্ত আছে কিনা, এই রকম নানান সম্ভাবনা গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল"।

murshidabad triple murder মৃত পরিবার। ছবি: পরাগ মজুমদার

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় সদা মিষ্টভাষী বলে পরিচিত জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার ১৬ নং ওয়ার্ডের কানাইগঞ্জ লেবুবাগানের বাসিন্দা বন্ধুপ্রকাশ ছিলেন গোসাঁইগ্রাম সাহাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পরিবার নিয়ে বছর আড়াই আগে থেকে এই এলাকায় বাড়ী তৈরি করে বসবাস করতে শুরু করেন।বন্ধুপ্রকাশবাবুর আদি বাড়ী জেলার সাগরদীঘি থানা এলাকায়। মূলত ছেলের ভবিষ্যৎ তথা পড়াশোনোর সুবিধার জন্যই তাঁরা জিয়াগঞ্জে এসে থাকতে শুরু করেন।

এই পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও তাল কাটে এদিন। উৎসবের দিনে পুরো পরিবারের কোন সাড়াশব্দ না পেয়েই এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ বাসা বাঁধে। তার পরেই বাড়ীর মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় রক্তাক্ত অবস্থায় নাবালক সহ তিনজনের ক্ষতবিক্ষত দেহ। বাড়ির বেডরুমে খাটের উপরে দেহ মেলে বন্ধুপ্রকাশবাবুর, ও মেঝেতে রক্তের মধ্যে গলার নলি কাটা অবস্থায় তাঁর ছেলে অঙ্গনের। এদিকে পাশের আরেকটি ঘর থেকে বন্ধুপ্রকাশবাবুর স্ত্রী বিউটি দেবীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।

খুনের কারণ নিয়ে চরম ধন্দে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পরিবারের আত্মীয়রাও। মৃত শিক্ষকের মাসতুতো ভাই নবগ্রাম থানার বন্ধুকৃষ্ণ ঘোষ সম্পূর্ণ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এই হত্যালীলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, "কোনোভাবেই এই ঘটনা মেনে নেওয়া তো দূরের কথা, এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না। ওইভাবে একটা ছোট্ট শিশু, পাশাপাশি তার সন্তানসম্ভবা মা-কে এত নৃশংসভাবে কেউ খুন করতে পারে! খুনিদের ফাঁসি ছাড়া কোনও সাজা নেই।"

Murshidabad Murder
Advertisment