বুধবার সকালে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে ৩২ বছরের এক যুবককে। এ ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে। মাত্র কয়েকদিন আগেই রাজ্য সরকার গণপিটুনি নিয়ে আইন পাশ করার পরেই এ ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে শাহজাদপুর-ফুলিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দী কবীর শেখ লালবাগের এক ওযুধের দোকানে ঢুকে সেখানকার ডাক্তারের চেম্বারের আসবাব ভাঙচুর শুরু করে। এরপরেই একদল লোক ওই চেম্বারে এসে কবীরকে মারতে শুরু করে। পরে কবীরের দেহ ওই ওষুধের দোকানের বারান্দায় দেখতে পাওয়া যায়। তার হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কবীরকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "এ ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, অন্যদের খোঁজ চলছে। তদন্ত জারি আছে।"
পুলিশ জানিয়েছে, কবীর শেখ আগে সৌদি আরবে রাজমিস্ত্রির কাজ করত, সম্প্রতি সে মুর্শিদাবাদে নিজের গ্রামে ফিরেছিল।
আরও পড়ুন, গৃহহীন রাজ্যের মন্ত্রী, চোখের জলে পাড়া ছাড়লেন মন্ত্রী-পত্নী
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে কবীর শেখ কেন ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি। তবে ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কবীরের পরিবারের লোকজন অবশ্য জানিয়েছেন তাঁর কোনও মানসিক অসুস্থতা ছিল না।
কবীরের স্ত্রী আক্লিমা বিবি বলেছেন, "আজ সকালে আমার স্বামী বাড়িতে কাজ করছিল। হঠাৎ জামা-কাপড় নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আমি জানি না ও কেন ডাক্তারের চেম্বারে গেল। যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি চাই। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।"
গণপিটুনির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন এম বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, "যখন ডাক্তারের জন্য রোগীরা অপেক্ষা করছেন তখন হঠাৎ একজন চেম্বারে ঢুকে এসি চালিয়ে দিয়ে বেঞ্চে শুয়ে পড়ে। আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম এরকম কেন করছে, তার কোনও উত্তর না দিয়ে সে লোক ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর শুরু করে। আমার দিকে একটা টেবিল ফ্যানও ছুড়ে মারে।" তবে কবীরকে কারা মারধর করেছে তা তিনি দেখেননি বলে জানিয়েছেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী।
গত ৩১ অগাস্ট রাজ্য বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ (গণপিটুনি প্রতিরোধ) বিল পাস হয়। এই বিল অনুসারে গণপ্রহারের মাধ্যমে কেউ আহত হলে যারা মারধর করেছে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। গণপিটুনির ফলে কেউ মারা গেলে, সেক্ষেত্রে শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।
রাজস্থানের পর দেশের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে গণপিটুনি বিরোধী আইন পাস করেছে পশ্চিমবঙ্গ।
Read the Full Story in English