Advertisment

অধীর গড়ে তৃণমূল নেতা খুনে বাড়ছে রহস্য, উঠে আসছে অন্তর্দ্বন্দ্বের তত্ত্ব

মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, "ধৃত পুলিশি জেরার মুখে জানিয়েছে সে ব্যক্তিগতভাবে চিরঞ্জিতকে অপছন্দ করত"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
murshidabad, মুর্শিদাবাদ, তৃণমূল, tmc, west bengal news, তৃণমূল নেতা খুন, পশ্চিমবঙ্গের খবর, murshidabad latest news, tmc leader murder, মুর্শিদাবাদের খবর

দলীয় পতাকা কাঁধে নীল টি-শার্ট পরা বাঁদিকে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। ছবি: পরাগ মজুমদার।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে অধীর গড় মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে টাউন তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক বছর বত্রিশের যুবক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ওরফে চিরু খুনের রহস্য। একদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তকে পুলিশি জেরার মধ্যে দিয়ে উঠে আসা তথ্যে পুরভোটের মুখে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল যেমন প্রকাশ পাচ্ছে , তেমনই জেলার সদর শহরজুড়ে রাতবিরেতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

Advertisment

এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, "ধৃত পুলিশি জেরার মুখে জানিয়েছে সে ব্যক্তিগতভাবে চিরঞ্জিতকে অপছন্দ করত"। এদিকে সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, ধৃত সুমন ইতিপূর্বে বহরমপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়েরও বিশেষ পরিচিত ছিল। অর্থাৎ চিরঞ্জিত ওরফে চিরু বর্তমানে নাড়ুগোপালবাবুর একান্ত ছায়াসঙ্গী হাওয়ায় সুমনের মনে তাঁর প্রতি চরম ঈর্ষা তৈরি হয়। কোথাও সে মনে মনে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে। প্রাথমিকভাবে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

যদিও এ ব্যাপারে খোদ টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপালবাবু দাবি করেন, "ধৃত সুমন আমাদের দলের কেউ নয়, পাড়া-প্রতিবেশী হিসেবে আমার সঙ্গে পরিচিত ছিল। সে কারণেই মাঝেমধ্য়ে বাড়িতে আসত"।

আরও পড়ুন: করোনায় ২ টাকার চাল এবার বিনামূল্যে, ঘোষণা মমতার

মঙ্গলবার গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে বহরমপুর খাগড়া এলাকায় দুষ্কৃতীদের পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন বহরমপুর টাউন তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ওরফে চিরু। ঘটনার জেরে তড়িঘড়ি আততায়ীদের খোঁজে তল্লাশিতে নামে বহরমপুর থানার পুলিশ।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বহরমপুর গোরাবাজার এলাকার বাসিন্দা ওই তৃণমুল নেতা তথা বহরমপুর পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী মঙ্গলবার রাতে টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। সেখান থেকে বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন চিরঞ্জিত। রেশম খাদি মোড় এলাকায় একদল দুষ্কৃতী চিরঞ্জিতের বাইক থামিয়ে তাঁকে কাছ থেকে গুলি করে চম্পট দেয়।

আরও পড়ুন: করোনায় মালেশিয়ায় আটকে বাঙালি পরিবার, ভারতীয় দূতাবাসে সাহায্যের আর্তি

এরপরই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ও নাড়ুগোপাল বাবুর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের একটি নার্সিংহোমে। সেখানে চিকিৎসকেরা চিরঞ্জিতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এদিকে স্বামীর মৃত্যুতে ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রী শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী বলেন," রাজনৈতিক কারণে আমার স্বামীকে চক্রান্ত করে খুন করা হয়েছে। আমি চাই পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিক"। বহরমপুর টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন,"ও কেবল দলের সক্রিয় নেতাই ছিল না, আমার ভাইয়ের মতো ছিল। আমার সঙ্গেই সব সময় থাকত।আমার রাজনৈতিক নানা ভাবনাচিন্তার কথা ওর সঙ্গে আমি ভাগ করে নিতাম। এটা চক্রান্ত করে ওকে খুন করা হয়েছে।পুলিশ এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের খুঁজে বের করুক এটাই আমরা চাই"।

এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র তথা অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক সচিব জয়ন্ত দাস বলেন, "যে কোনও মৃত্যুই নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। চির আমাদের খুব পরিচিত। কংগ্রেস ঘরানা থেকেই ওর রাজনীতিতে উত্থান, ওর মৃত্যুতে আমরা প্রচন্ড শোকাহত। তাই চাই পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। সঠিক দোষীকে খুঁজে বের করুক। প্রয়োজন মনে করলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় পুলিশ আমাদেরও সাহায্য নিতে পার। তবে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে"। এদিকে তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত সুমন রায়ের স্ত্রী গার্গী রায় দাবি করেন তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছে খুনের ঘটনায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc
Advertisment