"হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র…"! গত কয়েক বছরে সম্প্রীতির উদাহরণ হিসাবে বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে কাজী নজরুল ইসলামের কথা। তেমনই এক সম্প্রীতির নজির দেখা গেল হুগলিতে। খুশির ইদ উৎসবে প্রতিবেশী হিন্দু পরিবারে মৃত্যুর খবর পেয়ে এগিয়ে এলেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। মানবতা ভুলে করোনার ভয়ে যখন সবাই দূরে সরে রইলেন, তখন প্রতিবেশীর দেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন ধর্মীয় সংকীর্ণতা ভুলে।
পোলবা-দাদপুরের আশিক মোল্লা, গোলাম সুবানি, গোলাম সাব্বার, শেখ সানির মতো ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা শুক্রবার এক মহৎ কাজ করে নজির সৃষ্টি করলেন। ইদের নমাজ পড়ে তাঁরা উৎসব পালনে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা, সেইসময় খবর পেলেন পাশের গ্রামের ৭২ বছরের হরেন্দ্রনাথ সাধুখাঁর মৃত্য হয়েছে গতকাল। তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু কোভিড টেস্টের আগেই প্রাণ চলে যায় তাঁর।
দুর্ভোগের এখানেই শেষ নয়। করোনার ভয়ে সৎকারের জন্য কেউ এগিয়ে এলেন না। কেউ ফিরেও তাকায়নি। বৃদ্ধের একমাত্র ছেলে তখন সবার কাছে সাহায্যের জন্য দিশাহারা হয়ে ঘুরছেন, সেইসময় অসহায়তা বুঝতে পেরে এগিয়ে এলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা। সংক্রমণ ভয় উড়িয়ে হাজির হন মৃতের বাড়িতে। নিজেরাই খাট বেঁধে, ফুল মালায় দেহ সাজিয়ে কাঁধে তুলে নেন। চার মুসলিম প্রতিবেশীর কাঁধে শেষযাত্রা হয় ওই বৃদ্ধের।
শ্মশানের কাঠও জোগাড় করেন আশিক-গোলামরা। দাহ করা পর্যন্ত সদ্য পিতৃহারা ছেলের পাশে ছিলেন তাঁরা। সত্যি, করোনা কালে সম্প্রীতির ইদ অনেক কিছু শিখিয়ে গেল!