অফিসে মানসিক হেনস্থার অভিযোগে সল্টলেকের বহুতল থেকে পড়ে মারা গেলেন হাওড়ার এক বাসিন্দা। স্ত্রীকে মেসেজ করে তিনি বহুতল থেকে ঝাঁপ দেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরপরই ওই ব্যক্তিকে বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম চন্দন মণ্ডল। ঘটনায় অভিযোগের তির চন্দন মণ্ডল যে অফিসে কাজ করতেন, তার তিন জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে।
সল্টলেকের সিটি সেন্টার রয়্যালে এক ইভেন্টের প্রোগ্রাম ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই এসেছিলেন চন্দন মণ্ডল নামে ওই যুবক। যে সময় তিনি উপস্থিত হন, তার পরেই স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছু মেসেজ পাঠান। সেখানে তিনি যে আত্মহত্যা করতে চলেছেন, সেটাও হোয়াটসঅ্যাপে ওই ব্যক্তি জানান বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সেই সব হোয়াটসঅ্যাপের ভিত্তিতে পরিবারের অভিযোগ, চন্দন মণ্ডলকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছিল। সেই কারণেই তিনি ওই বহুতলের চতুর্থ তল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।
খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে হাজির হন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরা। খবর দেওয়া হয় চন্দন মণ্ডলের পরিবারের লোকজনকেও। তাঁরা এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চন্দন মণ্ডলের মায়ের আবার অভিযোগ, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁর ছেলেকে বহুতল থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ গোটা ঘটনাটি সরেজমিনে খতিয়ে দেখছে। পরিবারের অভিযোগ অবশ্য ওই যুবকের অফিসের আধিকারিকরা মানতে চাননি বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
চন্দন মণ্ডলের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস (মণ্ডল)-এর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হত। তারপর বলা হত, তিনি ঠিকমতো কাজ করেননি। এর আগে তিনি যে অফিসে কাজ করতেন, সেই অফিসের কর্তা অভিনা সিংহানিয়া ঋণ নেওয়ার ইস্যু তুলে তাঁর স্বামী চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে নতুন সংস্থার কর্তা কৃষ্ণ মুচ্ছলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই নিয়ে কৃষ্ণ মুচ্ছল প্রচণ্ড পরিমাণে মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছিলেন চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- স্বাস্থ্য সংকটে! শহরের নামজাদা হাসপাতালের কঙ্কালসার চেহারা প্রকাশ্যে
মৃত যুবকের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী ইদানিং হামেশাই বলতেন যে তিনি ভীষণভাবে মানসিক চাপে আছেন। যে কোনও সময় তাঁর চাকরি চলে যাবে। তিনি আর পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে কাজের জায়গায় তাঁর স্বামীকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। না-তিনি ঝাঁপ দিয়েছেন, সে ব্যাপারে পুলিশের কাছে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন প্রয়াত চন্দন মণ্ডলের স্ত্রী।