RG Kar Incident: নবান্ন অভিযানের আড়ালে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের ছক কষা হচ্ছে বলে দুপুরেই দাবি করে পুলিশ। আর এদিন বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের' তরফে শান্তিপূর্ণ নবান্ন অভিযানের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা হয়। একই সঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট যেখানে আরজি কর কাণ্ডে শান্তিপূর্ণ জমায়েতে প্রশাসনকে কোন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে নিষেধ করেছে সেখানে আগামীকালের অভিযানকে কেন্দ্র করে মিডিয়ার মাধ্যমে পুলিশ ভয় দেখানো চেষ্টা করছে।
সংগঠনের তরফে এদিন সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগামীকালের নবান্ন অভিযানের জন্য তাঁরা পুলিশের থেকে অনুমতি নিয়েছেন। তবে, যেহেতু সমাজমাধ্যমে এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে এটিকে ‘গণ আন্দোলন’ বলা হচ্ছে। তবে আগামীকালের মিছিলে কত জনের জমায়েত হবে সে বিষয়ে সংগঠনের তরফে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এদিনের বৈঠকে ছাত্র সংগঠনের তরফে সায়ন লাহিড়ি জানান, 'এই আন্দোলনের সঙ্গে কোন রাজনৈতিক যোগসাজশ নেই। সমাজ মাধ্যমে ছাত্রদের একাংশ আরজি কর কাণ্ডের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এই অভিযানের আয়োজন করেছে'। পাশাপাশি সংগঠনের তরফে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনে নগরপালের ভুমিকার সমালোচনা করে তাঁর পদত্যাগের দাবিও জানানো হয়েছে।
আগামীকালের অভিযান থেকে কোন রাজনৈতিক স্লোগান তোলা হবে না বলেও সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। মূলত দুটি স্লোগান তোলা হবে আগামীকাল নবান্ন অভিযানে এক মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, দ্বিতীয়ত, "উই ওয়ান্ট জাস্টিস"। সংগঠনের তরফে আরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ভাবে কালকের অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোন রাজনৈতিক দলের কোন নেতা মিছিলের সামনে রাজনৈতিক ঝান্ডা হাতে থাকবেন না। এটি হবে পুরোপুরি অরাজনৈতিক প্রতিবাদ। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনের এক সদস্য শুভঙ্কর হালদার আরএসএসের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা কার্যত স্বীকার করে নেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, বিরোধী রাজনীতি করার কারণে আমাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। আমি তিন মাস জেল খেটেছি। তবে তার সঙ্গে আগামীকালের নবান্ন অভিযানের কোন সম্পর্ক নেই। সংগঠনের তরফে আরও বলা হয়েছে, আগামীকাল মিছিল দুটি স্থান থেকে নবান্ন অভিমুখে রওনা হবে। এক কলেজ স্কোয়ার ও অন্যটি সাঁতরাগাছি থেকে। পাশাপাশি বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা হাওড়া থেকে মিছিল করে নবান্নের দিকে রওনা হবে।
< RG Kar Protest-BJP: আরজি কর ইস্যুতে যে কোনও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে BJP-র সমর্থন: সুকান্ত >
আর জি কর-কাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। আগামীকালই রয়েছে NTA-র পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে বলে জানানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের তরফে। পাশাপাশি মঙ্গলবারের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যপুলিশ।
রাজ্য পুলিশের তরফে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, নবান্ন সংরক্ষিত অঞ্চল। কালকের অভিযানের জন্য কোন সংগঠনের তরফে কোন অনুমতি চাওয়া হয়নি। পাশাআপশি আগামীকাল রয়েছে NTA-র পরীক্ষা। নবান্ন চত্ত্বরে কর্মসূচী করতে গেলে তার জন্য যথাযথ অনুমতি প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই অনুমতি নেওয়া হয়নি। অন্য কোথায় কর্মসূচীর কথা জানালে আমরা সাহায্য করতে পারি। সাধারণ মানুষের যাতে কোন অনুবিধা না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পরীক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। কালকের নবান্ন অভিযানের নেপথ্যে রয়েছে দুষ্কৃতীরা, তথ্য আছে পুলিশের কাছে। পরীক্ষার্থীদের যাতে কোন সমস্যা না হয় পুলিশের সেই চেষ্টা করবে'।
নবান্ন অভিযানের নামে শহরে অশান্তি ছড়ানোর ছক কষছে দুষ্কৃতিরা। শহরের নামী পাঁচতারা হোটেলে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক করছে সংগঠনের এক নেতা। এমনই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, এই বিষয়ে তথ্য প্রমাণ আমরা আদালতে পেশ করব। সাধারণ মানুষকে অভিযান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পুলিশের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ছাত্র সমাজ কেন ছাত্র স্বার্থ বিরোধী কাজকর্ম করছে? পুলিশের আশঙ্কা মহিলা ও পড়ুয়ায়াদের সামনে রেখে পিছন থেকে অশান্তির ছক করা হচ্ছে।
‘ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযান কর্মসূচির কারণে অসংখ্য পরীক্ষার্থী তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের তরফে। পুলিশের তরফে এদিন সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে দিয়ে বলা হয়েছে আইনত নবান্ন অভিযান বেআইনি। নবান্ন চত্বরে মিছিল করতে গেলে পুলিশের অনুমতি প্রয়োজন। নবান্ন সংরক্ষিত অঞ্চল কোন কর্মসূচি করতে গেলে অনুমতি চাইতে হয়। সংরক্ষিত এলাকা নবান্নে কোন কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া যায় না। অনুমতি না নেওয়ার কারণে এই কর্মসূচি বেআইনি। অন্য কোথাও করার কথা জানালে আমরা সাহায্য করতে পারি। অনেক দুষ্কৃতি গন্ডগোল চাইছে। গন্ডগোল করে দুষ্কৃতীরা ফায়দা তুলতে চাইছে।