/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/24/durga-puja-2025-09-24-09-58-49.jpg)
Durga Puja 2025: পুরনো সেই রীতি মেনেই চলে দশভুজার আরাধনা।
Durga Puja 2025: ১৯৭১ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে গোলাগুলিতে সীমান্ত হ্যারিশনগরের বিশ্বাস বাড়ির দুর্গা মন্দিরের থাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বছরই উমা আরাধনা বাধাপ্রাপ্ত হয়। তারপর থেকে আর পুজো বাধা পড়েনি। টানা ১৭৬ বছরের বেশি সময় ধরে উমা আরাধনা হয়ে আসছে। বর্তমানে আগের মতো পুরনো রীতি মেনে ২৮ টি পিতলের থালা বের করা হয়।
সেই থালার দুটিতে বাড়ির মহিলাদের হাতে তৈরি প্রদীপ জ্বেলে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে আজও পুজো করা হয়। বাংলাদেশের দর্শনা পূর্ব দিকের বজিদ্বে গ্রাম থেকে গেদে উত্তর পাড়ায় উঠে আসা বিশ্বাসদের এই পুজো গ্রামবাসীদের একান্ত ভক্তি শ্রদ্ধার পুজো হয়ে উঠেছে।
জানাগিয়েছে, রতিকান্ত বিশ্বাস পুজোটা শুরু করেন। গোটা এলাকায় তখন পুজো ছিল না। হ্যারিশনগরের বিশ্বাস পরিবার পুজো শুরু করেন। সেসময় তাদের পাট, কাপড় সহ একাধিক ব্যবসা ছিল। এই পরিবারের রতিকান্ত বিশ্বাস গ্রামের সকলকে ডেকে মঙ্গলার্থে পুজো শুরু করেন। ২১৮৮ দাগ নম্বরে মন্দির করে এই পুজোর সূচনা হয়।
পরবতী কালে গোটা হ্যারিশনগরের পুজো বলে খ্যাতি লাভ করে। ব্রিটিশ আমলে পাশেই থাকা কুটীরপাড়ায় নীলকর সাহেবরা নীল চাষ করাতো। এখানেই থাকতেন হ্যারিশ সাহেব। তার নাম অনুসারে গোটা এলাকার নাম হ্যারিশ নগর হয়ে ওঠে। এর আগে এখানকার নাম ছিল উকনেদার।
এই বিশ্বাস পরিবার হ্যারিশনগরে সেসময় ছোটখাটো জমিদার বলেই চিহ্নিত ছিল। তাই তাদের পুজোতে গোটা গ্রামের মানুষের উপস্থিতি ভোগ পাওয়ার বিষয়াদি ছিল। একটানা পুজো হয়ে আসার মাঝে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারত — পাকিস্তানের যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে ব্যাপক গোলাগুলি হলে বিশ্বাস বাড়ির মন্দিরের থাম ভেঙে যায়। সে বছর পুজোটা বন্ধ থাকে। পরে থাম মেরামত করা হয়।
ওই একবার পুজোটা বন্ধ হয়। তারপরও টানা পুজো হয়ে চলছে। এখানে দেবীকে ষষ্ঠীতে বোধনের পর মন্দিরের সিংহাসনে তোলা হয়। একচালার ডাকে সাজের দেবীকে দেখতে তখন থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। হলুদ বর্ণের দেবীকে দেখতে দূর দুরান্ত থেকে মানুষ আসেন। অনেক মানত করেন। মনস্কামনা পূর্ণ হলে পুজো দিতে আসে। আগে বলি হত।
এখন চাল কুমড়ো বলি হয়। পুজো হয় স্বাত্বিক মতে। আগে গ্রামবাসীরা ভোগের প্রসাদ পেত। এখন আর দেওয়া সম্ভব হয় না। অষ্টমীতে লুচি, সন্দেশ, পাঁচ ভাজা ভোগ দেওয়া হয়। নবমীর দিন খিচুড়ি ভোগ হয়। দশমীতে চিড়ে ভোগ দেওয়া হয়। দশমীর দিনই বিসর্জন হয়। এ পুজো নিয়ে বিশ্বাস পরিবারের সদস্য প্রদ্যুৎ বিশ্বাস বলেন, "আমাদের পূর্বপুরুষরা দর্শনা পূর্ব দিকে বজিদ্বে গ্রামে থাকতেন। সেই সময় তারা গেদের উত্তর পাড়ায় উঠে আসেন। হ্যারিশনগরে আমাদের বাড়ির পুজো ১৭৬ বছরের বেশি সময় ধরে হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে বাড়ির বাইরে থাকা আত্মীয় স্বজন সকলে মিলিত হয়ে পুজোর কটা দিন ভালো কাটে।"
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us