প্রাণঘাতী বৃষ্টি! নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা চা বাগানে ভেসে মৃত কমপক্ষে ৫, নিখোঁজ একাধিক

জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হল এক শিশু সহ কমপক্ষে ৫ জনের। নিখোঁজ আরও একাধিক ব্যক্তি। ভেঙে গিয়েছে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরের সেতুর একাংশ।

জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হল এক শিশু সহ কমপক্ষে ৫ জনের। নিখোঁজ আরও একাধিক ব্যক্তি। ভেঙে গিয়েছে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরের সেতুর একাংশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
IMG-20251005-WA0070

প্রাণঘাতী বৃষ্টি

প্রবল বর্ষণের জেরে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক শিশু-সহ অন্তত পাঁচ জনের। নিখোঁজ আরও কয়েকজন। প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি সেতুর অংশ, ভেসে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অধীনে নির্মিত রাস্তা ও সেতু। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কয়েকশো ঘরবাড়ি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডায়নার বাঁধ। বহু জায়গায় উপড়ে পড়েছে গাছ, এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হয়নি। শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত টানা বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ডুয়ার্সের চা বলয়ের অন্যতম কেন্দ্র নাগরাকাটা।

Advertisment

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টিতে নিকাশি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় জল জমে যায় বামনডাঙ্গা চা বাগানের মডেল ভিলেজে, যেখানে প্রায় ৫০০টি পরিবার বসবাস করে। কোমর সমান জল বাড়তে শুরু করতেই গ্রামবাসীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘর ছেড়ে পালাতে শুরু করেন। অনেকেই নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে পারলেও, অনেকে জলের তোড়ে ভেসে যান। এই ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন শানচারোয়া সাউ (৬৫), কস্তু লোহার (৩০), রাধিকা লোহার (২৫), শিল্পা মুন্ডা (২৫) এবং আলিশা নাগাসিয়া নামে এক মহিলার দুই মাসের শিশুকন্যা। জানা গিয়েছে, শিশুটি মায়ের কোল থেকে ছিটকে জলে পড়ে যায়। মৃতদের মধ্যে কস্তু ও রাধিকা দম্পতি। নিখোঁজদের মধ্যে আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে, তাঁদের খোঁজ চলছে।

ঘটনার পর উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)। নাগরাকাটার এই বিপর্যয়ের তুলনা অনেকে টানছেন ১৯৬৮ সালের ৪ অক্টোবরের ভয়াবহ তিস্তা বন্যার সঙ্গে, যা জলপাইগুড়ি শহরকে তছনছ করে দিয়েছিল। নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, “অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে আমরা রয়েছি। নাগরাকাটা ব্লকে যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা প্রশাসনের শীর্ষ মহলে জানানো হচ্ছে।”

Advertisment

বামনডাঙ্গা চা বাগানের মডেল ভিলেজ ছাড়াও চা বাগানের ১৮ নম্বর লাইন, বিচ লাইন ও হাতি লাইনের মতো শ্রমিক মহল্লাগুলিতেও জল ঢুকে গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ পরিবার ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। তাঁদের আপাতত বাগানের ফ্যাক্টরিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য লক্ষণ কাওয়ার বলেন, “গোটা এলাকা জুড়ে এখন শুধুই শোকের ছায়া।”

South Bengal IMD rain