দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে তোলপাড় বাংলা। বেআইনি বাজি কারবারের নেপথ্যে উঠে আসছে অনেকের নাম। পুলিশের নজরে কাপড়ের ক্ষুদ্র দোকানি জেরাত আলি। স্থানীয়দের দাবি, আদতে ক্ষুদ্র ব্য়বসায়ী হলেও এলাকায় তাঁর দাপট নাকি সাঙ্ঘাতিক। প্রকাশ্যে বস্ত্র ব্যবসায়ী হলেও দত্তপুকুরের বাজি ব্যবসা চারা থেকে মহিরুহে পরিণত হওয়ার নেপথ্যে নাকি তাঁর ভূমিকা অগ্রগন্য। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার সতীশের দাবি, স্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম পাণ্ডা হিসেবে মুর্শিদাবাদের এক জনের নাম উঠে আসছে। তার ব্যাপারে জেলা পুলিশের গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ করছে। আমরা গোটা ব্যাপারটার উপরেই নজর রাখছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
কে এই জেরাত আলি?
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগণার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে উঠে আসছে জেরাতের নাম। পুলিশের ধারণা, বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে চার জনেরই বাড়ি মুর্শিদাবাদে। সন্দেহ, এই শ্রমিকদের মুর্শিদাবাদ থেকে দত্তপুকুরে বাজির কারখানায় কাজ করতে পাঠিয়েছিলেন জেরাত। স্থানীয়দের দাবি, অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জেরাতের উত্থান হয়েছে রকেটগতিতে। এর নেপথ্যে রয়েছে জেরাতের তত্ত্বাবধানে বোমা মশলা এবং বোমা বানানো শ্রমিক সরবরাহের সিন্ডিকেট। যা নবাবের জেলাতে বসেই নিয়ন্ত্রণ করতেন জেরাত।
স্থানীয়দের কথায়, ভোরের আলো ফোটার আগে পিকআপ ভ্যানে কাপড়ের গাঁটরির বস্তা অন্যত্র চলে যেত। তাঁদের দাবি ওই গাঁটরির বস্তায় ঝাড়খণ্ড থেকে বোমার মশলা জেরাতের ডেরায় আসত। আর সন্ধে হলেই গোডাউনের সামনে এসে দাঁড়াত ১০ চাকা কিংবা ১৬ চাকার বড় ট্রাক। কয়েক ঘণ্টায় ফাঁকা হয়ে যেত জেরাতের কাপড়ের গুদাম।
আরও পড়ুন- পুকুরে মিলল কাটা মুণ্ড, ধড় জঙ্গলে! বিস্ফোরণে মৃত বেড়ে ৯, গ্রেফতার ১
জেরাত আলির এক প্রতিবেশীর দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে বোমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত সে। কাপড়ের ব্যবসা শুধু দেখানোর জন্য। এখন বোমার মশলার ব্যবসা শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছে। বেশি রোজগারের লোভ দেখিয়েই মুর্শিবাদ থেকে স্থানীয়দের জেরাত কাজে নিয়ে যেত। কিন্তু কোথায় কাজ, তা বাড়ির কাউকে জানানোর নিয়ম ছিল না, এমনকী বাড়ির লোকেদেরও। বাড়ির লোকেরাও শ্রমিকদের ফোন করতে পারতো না। জেরাতের দেওয়া নম্বরেই কথা বলতে হত।
এই প্রথম নয়, এর আগে জেলার একাধিক বিস্ফোরণকাণ্ডে নাম উঠেছে জেরাতের। এনআইয়ের নজরও ছিল তাঁর গতিবিধি-তে।
মাস কয়েক আগেই মুর্শিদাবাদের একটি বিস্ফোরণ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল জেরাতকে। এক মাস জেলবন্দিও ছিলেন। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে যান।