এদিন শুনানির শুরুতেই এই মামলায় রাজ্যকে পক্ষ বানানোর জন্য বৃহত্তির বেঞ্চের কাছে মৌখিক আবেদন জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল তথা সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহেতা। তাঁর যুক্তি অভিযুক্তরা নিজেদের কথা বলবেন। কিন্তু, রাজ্যকেও তার বক্তব্য রাখতে হবে। এরপরই রাজ্যকে মামলায় পক্ষ করার অনুমতি দিয় কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
১৭ মে চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইঁট পাথরও। প্রথম থেকেই সেই ঘটনা নিয়ে সরব সিবিআই। ধৃতরা যে প্রভাবশালী ও মামলা এ রাজ্যে চললে তা প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ওই দিনের বিক্ষোভকে 'মব তন্ত্র' বলে উল্লেখ করে এই মামলার তদন্তকে অন্যত্র সরানোর জন্য এদিন আদালতে সওয়াল করেন তুষার মেহেতা। আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে দাবি করেন তিনি। নিম্ন আদালতে এই মামলায় সাধারণ মানুষের উপলব্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন- প্রবল শ্বাসকষ্ট-জ্বর, অসুস্থ অনুব্রত মণ্ডল, আনা হচ্ছে কলকাতায়
এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বললেন, ‘আমি মনে করি না, সাধারণ মানুষের আবেগ আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করে। ন্যায় বিচার ব্যবস্থাকে এড়াতে পারে। অসন্তোষ থাকলে উচ্চতর আদালত আছে।’ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিচারকের প্রভাবিত হওয়ার প্রমাণ না থাকলে আমরা কী করতে পারি?’ বিচারপতি বলেন, ‘দেশে প্রচুর হাই প্রোফাইল গ্রেফতারির ঘটনা ঘটে। সেখানেও মানুষের আবেগ আছে, মানুষের কান্না থাকে। কিন্তু প্রমাণ করতে হবে যে বিচারক তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। সেটা না হলে এই উদাহরণ আপনাদের বিপরীতে যেতে পারে।’
আরও পড়ুন- ১৫ জুন পর্যন্ত রাজ্যে বাড়ল Covid বিধিনিষেধ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মেহেতার সওয়ালের পাল্টা অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, 'জনসাধারণের ভয় দেখিয়ে জামিনের বিরোধিতা করা কোনও যুক্তি হতে পারে না। সাধারণ বিচারে অভিযুক্তরা জামিন পাওয়ার যোগ্য। অভিযুক্তরা কিন্তু ১৭ মে মৌখিক আবেদনের ভিত্তিতে জামিন পেয়েছিল। আর তার দুদিন পরই আইনশৃঙ্খলা খারাপ হওয়ার কারণ দেখিয়ে দেখিয়ে হলফনামা করা হল। জনরোষ জামিন বাতিলের কারণ হতে পারে না। তুষার মেহেতা যেসব প্রশ্ন তুলছেন সেই আলোচনা পরে হতে পারে'
এরপরই ৪ নেতা-মন্ত্রীর জামিন মামলার শুনানি আরও একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন