আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গর্জে উঠল ইমাম সংগঠন। যে কায়দায় নওশাদকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়ে তার প্রতিবাদ করা হয়েছে। একটি দলের মিছিল, মিটিংয়ে পুলিশের গাড়ি জ্বালালে পুলিশ লাঠি পেটা না করলেও কেন আইএসএফের রাজনৈতিক আন্দোলনে উর্দিধারীদের কড়া পদক্ষেপ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
নওশাদের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে চেয়ারম্যান মঃ ইয়াহিয়া একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানেই তিনি বলেছেন, 'আজ সন্ধ্যায় বিধায়ক নওশাদের উপর পুলিশের যে বর্বরোচিত ও অমানবিক আচরণ, আমরা এর তীব্র ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছি। অদ্ভূত যুক্তি শুনালাম যে প্রিজন ভ্যানের কাচ ভাঙার জন্য তারা লাঠি চার্জ করেছেন, অদ্ভুত। কিছুদিন আগে এই বাংলায়, এই কলকাতায় অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে, মিটিংয়ে মিছিলে পুলিশের গাড়িকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের কর্মীদের তাড়িয়ে তাড়িয়ে মারার ভিডিও মরা দেখেছি। পুলিশের কর্মীরা প্রাণভয়ে মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কই তখন তো লাঠি চার্জ করতে থাকেনি তাহলে অন্য আরেকটি রাজনৈতিক দল, একটাছোট্ট রাজনৈতিক দল যার একটা মাত্র বিধয়ক এবং অত্যন্ত মিশুখে ভদ্র একটা যুবক ছেলে, সেই বিধায়ককে টেনে হিঁচড়ে মারতে হবে? অদ্ভুত। শাসক দল কাকে ভয় পাচ্ছেন? একসময়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের উপরও সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দলের ঠিক এইরকমই অত্যাচার নেমে এসেছিল। তার পরিণাম তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে। পশ্চিম বাংলার মানুষ ক্ষমা করেনি। সুতরাং শাসককে তো আরও সহনীয়, নমনীয় হওয়া দরকার। আমরা দাবি জানাচ্ছি, প্রত্যেকটা দোষী ভ্যক্তিকে অবিলম্বে শাস্তির মুখোমুখি করা হোক এবং প্রকাশ্যে তাদের নাম জানানো হোক যে কারা নওশাদ সিদ্দিকির উপর এরকম অত্যাচার করেছে।'
গত সেপ্টেম্বরে বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিশের পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটেছিল। ওই কাজ গেরুয়া দলের কর্মী, সমর্থকদের বলে অভিযোগ করে লালবাজার। পুলিশের আধিকারিক সহ কর্মীদের মার খেতেও দেখা যায়। প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল তৃণমূল। শনিবার ভিডিও বার্তায় বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মঃ ইয়াহিয়া সেই ঘটনাই উল্লেখ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে পুলিশ–আইএসএফ কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে ধর্মতলা চত্বর রণক্ষেত্র হয়। ভাঙড়ের হাতিশালার সংঘর্ষের প্রতিবাদে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দির নেতৃত্বে আইএসএফ কর্মী, সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করে ধর্মতলায় রাস্তায় বলে পড়েন। পুলিশ অবরোধ তুলতে অনুরোধ করলেও নিজেদের দাবিতেই অনড় ছিলেন তারা। একসময়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে আইএসএফ কর্মীরা ইট, পাথ ছোড়ে বলে অভিযোগ। ভেঙে দেওয়া হয় প্রিজন ভ্যানের কাঁচ, হেয়ার স্ট্রিট থানার ধর্মতলার অফিসও। এরপরই পুলিশ অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। নওশাদকেও চ্যাংদোলা করে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। গ্রেফতার করে তাঁকে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন সংঘর্ষের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল। তাঁর পাল্টা দাবি, 'বিনা প্ররোচনায় পুলিশকে আক্রমণ করেছেন আইএসএফের কর্মীরা। তাই তাঁদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে এবং আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে।'