মালদার পার লালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় দাতাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার পর সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলে গেল জাতীয় মহিলা কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার সকালে কলকাতা থেকে বন্দে ভারত ট্রেনে করে জাতীয় মহিলা মানবাধিকার কমিশনের দলটি । এদিন দুপুরে বৈষ্ণবনগর থানার পারলালপুর হাইস্কুলে যান তাঁরা ।বেশ কিছুক্ষণ সেখানে আশ্রয় দাতাদের সঙ্গে কথা বলার পর সরাসরি কনভয় নিয়ে বেরিয়ে যান তারা।
এদিকে এদিন পারলালপুর হাইস্কুল ক্যাম্পে থাকা ধুলিয়ানের ঘরছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের দলের কর্মকর্তারা। তাঁদের মুখ থেকে ঘটনার দিনের বিবরণ সহ ঘটনা পরবর্তী বিভিন্ন সমস্যা ও অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন। সমস্ত কিছু শোনার পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে পারলালপুর হাইস্কুল থেকে ফিরে যান। সূত্রের খবর তারা দিল্লিতে গিয়ে কমিশনের আধিকারিকের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবেন।
জাতীয় মহিলা কমিশনের তিন সদস্যের এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারপারসন বিজয়া কিশোর রাহাতকার । এদিন দুপুরে বৈষ্ণবনগর থানার পারলালপুর হাইস্কুলে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। যদিও সেই সময় সংবাদ মাধ্যমকে ওই স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি । ভেতরে গিয়েই মহিলা কমিশনের কর্মকর্তারা আশ্রয় দাতাদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। তারপরে সেখান থেকে ফিরে যান তাঁরা।
এদিকে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা ফিরে যেতেই পারলালপুর হাইস্কুলে শতাধিক আশ্রয়দাতারা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সামনে চরম বিক্ষোভ দেখান। সংশ্লিষ্ট স্কুলে আশ্রয়দাতাদের অভিযোগ , তাদেরকে স্কুলে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। বাইরে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না ।
আবার পুলিশের একাংশ চাপ দিয়ে তাদের নিজেদের বাড়ি ফিরে যেতে বলছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অনেকেই বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন নি। এদিন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সামনেই স্কুলের মধ্যেই বিক্ষোভে সোচ্চার হোন আশ্রয়দাতারা।
ধুলিয়ানের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেতবনা এলাকার বাসিন্দা বিমলা মন্ডল বলেন, আমাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমরা বলেছি এলাকায় বিএসএফের ক্যাম্প থাকলে অবশ্যই আমরা ফিরে যাব। তবে এই স্কুলে আমাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া না। ধুলিয়ানে দুষ্কৃতীদের তান্ডবের ঘটনার পর গত কয়েকদিন ধরে স্কুলে রয়েছি। পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। শৌচাগারগুলি নোংরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে । রীতিমতো বন্দী করে রাখা হয়েছে আমাদের। এনিয়ে এদিন পুলিশ ও প্রশাসনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন জানিয়েছেন, এরকম কোন সমস্যা হয় নি । অবাঞ্ছিত কেউ যাতে স্কুলে ঢুকে বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে, সেই জন্যই পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাওয়ার বিলির পাশাপাশি সমস্ত রকম ভাবে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে ওদের সাহায্য করা হচ্ছে।