Advertisment

আপনি দার্জিলিং চা খাচ্ছেন নাকি নেপালি চা! কীভাবে চিনবেন?

সমীক্ষা বলছে, ভারত সহ আন্তর্জাতিক বাজারে এখন আর দার্জিলিং চা নেই, পরিবর্তে রয়েছে নেপালি চা। দামও উঠেছে দার্জিলিং চায়ের সমান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
darjeeling tea

দার্জিলিং চা খাচ্ছেন কি?

দার্জিলিঙের চা-শিল্পের শিরদাঁড়ায় আঘাত, দেশে জুড়ে বিক্রি হচ্ছে নেপালী চা! গতবছর অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধ চলেছিল বাংলার পাহাড়ে। যার ফলে ভয়ানক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় দার্জিলিঙের চা-শিল্পকে। যে ক্ষতি অনেক সুদূরপ্রসারী। এখনও যে আর্থিক ক্ষতির ধাক্কা সামলে চলেছে দার্জিলিং চা। বিদেশ বিভুঁইয়ে সেই চায়ের রপ্তানিতে এখন মন্দার বাজার। এই ফাঁকে রমরমিয়ে চায়ের ব্যবসা শুরু করেছে নেপাল।

Advertisment

সমীক্ষা বলছে, ভারত সহ আন্তর্জাতিক বাজারে এখন দার্জিলিং চা নেই, রয়েছে নেপালি চা। দামও উঠেছে দার্জিলিং চায়ের সমান। নেপালের সীমান্ত থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে চা বাগান। পাহাড়ে চা শিল্প মানেই ছিল দার্জিলিং চা। সেই খ্যাতির রেশ এখন কাপ প্লেটেই ধরা রয়েছে মাত্র।

নেপাল ও দার্জিলিং চায়ের পার্থক্য উনিশ বিশ হলেও, নেপালী চায়ের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। নেপালি চা পাতা অত্যন্ত মসৃণ, এবং সহজে বিভিন্ন স্তরের চা প্রস্তুত করা যায় বলে জানিয়েছেন আমেরিকান চা বিক্রেতা জনি ডড্।

সূত্রের খবর, নেপাল থেকে ভারতের বাজারে ভাঙা পাতার 'ব্ল্যাক-টি' ও গোটাপাতার অধিকাংশই রপ্তানি হয়। সেগুলিকে ভারতীয় বিক্রেতারা দার্জিলিং চায়ের লেবেল সেঁটে বিক্রি করে থাকেন।

Advertisment

২০০০ সালে বচন এবং লোচন গিয়াওয়ালি জুন চিয়াবাড়ি এস্টেট তৈরি করেন নেপালের ধানকুটায়। তাঁরা চেয়েছিলেন, দার্জিলিং চায়ের অনুকরণ করতে। চা বাগানের মালিক ৫৭ বছরের বচন বলেন, "নেপাল চিরকালই দার্জিলিংয়ের চেয়ে চায়ের ব্যাপারে ছোট, কিন্তু যখন আমরা চা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলি, তাঁরা বলেন নেপালের চা না কেনার কোনো কারণ নেই।" ব্যস, শুরু হয় নেপালি চায়ের রপ্তানি। এবং এখন দার্জিলিং চায়ের সরবরাহ সঙ্কটের সুযোগে ডিলারের মাধ্যমে ভারতের বাজার ধরার চেষ্টা করছেন নেপালি ব্যবসায়ীরা।

কলকাতার লালবাজার এলাকার ধ্রুব চায়ের দোকানের কর্মকর্তা সৌভরী মোদক বলেন, "দাম কম বলেই মূলত নেপালি চায়ের ব্যবসা বেড়েছে। দার্জিলিং চায়ের অনেক দাম, তাই দার্জিলিং চায়ের স্বাদ মেটাতেই চা প্রেমী মানুষজন ঝুঁকে পড়েছেন নেপালি চায়ের দিকে। হালকা ব্লেন্ডের হয় বলে খেতেও ভালো হয়। তবে দার্জিলিং চা-কে ছাপিয়ে যেতে পারবে না। কারণ একটা দুটো ছাড়া নেপালের নিজস্ব কোনো বাগান নেই। চা পাতা কিনে তারা কারাখানায় তৈরি করে। যে মাটিতে দার্জিলিং চা চাষ হয়, সেই মাটি নেপাল পাবে না, সেই কারণেই মূলত দার্জিলিং চায়ের স্বাদ আলাদা হয়।"

তিনি আরও বলেন, "দামের ফারাকে দার্জিলিং চায়ের বাজার নিয়ে নিয়েছে নেপালি চা। ১০০ থেকে ২০০ টাকা ফারাক থাকে। কলকাতা শহরে অনেকেই নেপালি চা খেতে শুরু করেছেন। আগে নেপালের চা সেই ভাবে জনপ্রিয় ছিল না। নেপালি চা সহজেই দার্জিলিং চা বলে চালানো যায়, যেটা করা অন্যায়। কিন্তু যখন বাজারে দার্জিলিং চায়ের মন্দা চলছিল, তখন নেপালি চা-কে দার্জিলিং চায়ের জায়গায় বসিয়ে অনেকেই বিক্রি করেছেন। কারণ চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু যাঁরা দার্জিলিং চা প্রেমী, তাঁরা বুঝবেন নেপালি আর দার্জিলিং চায়ের স্বাদের তফাৎ।"

darjeeling
Advertisment