বিতর্ক দূরে ঠেলে ফলক-কাণ্ডে বেনজির তৎপরতা, বিশ্বভারতীর নতুন উদ্যোগ জোর চর্চায়!

উপাচার্য থাকাকালীন বিশ্বভারতীতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উদ্যোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

উপাচার্য থাকাকালীন বিশ্বভারতীতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উদ্যোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

IE Bangla Web Desk & Nilotpal Sil
New Update
New plaque installed at Visva Bharati University

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নয়া তৎপরতায় খুশি রবীন্দ্রপ্রেমীরা।

কেন্দ্রের তরফেই বিতর্কিত ফলক সরানোর নির্দেশ এসেছিল বিশ্বভারতীতে। নতুন ফলকের কী বয়ান হবে তা ঠিক করতে কমিটি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের চিঠিতে। তারপরেই ইউনেসকোর হেরিটেজ স্বীকৃতির প্রাপ্তির নতুন ফলক তৈরির তৎপরতা শুরু হয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। অবশেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ব্রাত্য রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রাক্তন উপাচার্যের নাম লেখা হেরিটেজ স্বীকৃতি প্রাপ্তির ফলক ভেঙে ফেলা হয়েছে শান্তিনিকেতনে। শান্তিনিকেতনের তিনটি ঐতিহ্যবাহী স্থানে বসানো আগের তিনটি ফলকই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বদলে বসেছে নয়া ফলক।

Advertisment

স্বাভাবিকভাবেই এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, পড়ুয়া থেকে শুরু করে আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা। রবীন্দ্রপ্রেমীদের একটি বড় অংশই এর আগে প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন। চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। সেই স্বীকৃতি প্রাপ্তির ফলক বসানো হয়েছিল শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন ও গৌড় প্রাঙ্গণে। সেই ফলকের বয়ানে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। কারণ ফলকে ব্রাত্য থেকে গিয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথই। বরং নাম লেখা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী ও সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর।

বিশ্বভারতীর সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীই এমন কান্ডের কারিগর বলে অভিযোগ তুলে নানা মহল থেকে নিন্দা, প্রতিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল। সেই বিতর্কের মাঝেই মেয়াদ পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় উপাচার্য পদে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ বাড়ায়নি শিক্ষামন্ত্রক। গত ৮ নভেম্বর বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে উপাচার্যর পদ থেকে সরতে হয়েছে। তার পরে পরেই শিক্ষা মন্ত্রকের চিঠি এসে পৌঁছেছে বিশ্বভারতীতে।

ফলক বিতর্কের অবসান ঘটাতেই এমন চিঠি বলে স্পষ্ট হয়েছিল। আগের ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না রাখা নিয়ে বঙ্গজুড়ে সমালোচনার আঁচ নিশ্চিতভাবেই পৌঁছেছিল দিল্লিতেও। মনে করা হচ্ছে, সেই আঁচ উপলব্ধি করেই এমন নির্দেশ পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। সূত্র মারফত জানা গেছে, ফলক বদলের নির্দেশের পাশাপাশি নতুন ফলকের বয়ান কী হবে, তা ঠিক করতেও একটি কমিটি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে।

Advertisment

আরও পড়ুন- বাংলার বকেয়া ইস্যুতে মোদীর মন্ত্রী গিরিরাজের পরামর্শ মানবেন? জবাব দিলেন মমতা

ইংরেজি ও হিন্দিতে বয়ান তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাতেও সেই বয়ান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। সেই বয়ানে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কারও নাম নেই। বয়ানের একটি অংশ হল, ‘১৯২১ সালে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবধারা ও আদর্শে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী। এই শান্তিনিকেতন উদ্ভাবন ও সম্প্রীতির চেতনাকে লালন করে…।’

গত ১৪ নভেম্বর ফলক নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এই নির্দেশ বিশ্বভারতীতে এসে পৌঁছনোর পর তৎপরতা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। অবশেষে নির্দেশের ২০ দিন পর ফলক ভাঙল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার বদলে বসানো হল নয়া ফলক। বিশ্বভারতীর পড়ুয়া তথা এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এর জন্যেই তো আমরা সরব ছিলাম। উপাচার্যের কাছে বিশ্বভারতীর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত স্বার্থই যে প্রাধান্য পেয়েছিল তার আরও একটি প্রমাণ হল এই বিতর্কিত ফলক।’’

visva bharati Bolpur Birbhum West Bengal