NIA-এর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাশাপাশি এনআইএ বলেছে তাদের উপর সম্পূর্ণভাবে বিনা প্ররোচনায় আক্রমণ করা হয়। একই সঙ্গে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংস্থা দাবি করেছে তাদের উপর হামলার পর যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সম্পুর্ণ আইন মাফিক নেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালির ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি হল ভূপতিনগরে। NIA-এর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয় ভূপতিনগর থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তও শুরু করে দিয়েছে। শনিবার কাঁথির ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। দুই তৃণমূল নেতাকে আটক করে গাড়িতে তোলার পরেই ধু্ন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায়। ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবারের তরফেই এবার NIA আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। এবার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিপ্তে মুখ খুলল জাতীয় তদন্ত সংস্থা।
এক বিবৃতিতে এনআইএ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে এনআইয়ের বিরুদ্ধে উস্কানির যে অভিযোগ ওঠে তাও অস্বীকার করা হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার তরফে। এক্স হ্যান্ডেলে গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও উল্লেখ করেছে এনআইএ। ভূপতিনগর বিস্ফোরণ মামলায় সবরকম আঁতাতের অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে সংস্থার তরফে। উল্লেখ্য শনিবার, এনআইএর উপর হামলার কয়েক ঘন্টা পরে, পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির (Contai) ভূপতিনগরের বিস্ফোরণ মামলার (Bhupatinagar Blast) তদন্তে গিয়েছিল NIA। শনিবার ওই এলাকা থেকে দুই তৃণমূল নেতাকে আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। সেই সময়ে তাঁদের গাড়ি আটকে চলে ভাঙচুর। এমনকী কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের মারধরের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ। গতকালই ভূপতিনগর থানায় NIA-র তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে, গতকাল রাতে ভূপতিনগর থানায় বিস্ফোরণ মামলায় ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবারের তরফে গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের শ্লীতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করেছে।
যদিও ভূপতিনগরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধেই গতকাল সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। তিনি গতকাল বলেছিলেন, ‘মধ্যরাতে কেন গিয়েছিল? স্থানীয় পুলিশকে জানিয়ে তো যায়নি। মধ্যরাতে গ্রামের মানুষ অচেনা কাউকে দেখলে তো এমনই ঘটে!’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘ভোটের আগে কেন গ্রেফতার? সব ভোট ম্যানেজারদের গ্রেফতার করে ভোটে জিতবে? কী অধিকার আছে এনআইএর? বিজেপি যে নোংরা খেলা খেলছে তার বিরুদ্ধে আমরা আওয়াজ তুলব সারা দেশে।”
গতকাল ভূপতিনগরে NIA-এর হাতে ধৃত দুই তৃণমূল নেতা বলাইচরণ মাইতি ও মনোব্রত জানাকে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত NIA হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিন কেন্দ্রীয় এই সংস্থাটির তরফে আদালতে জানানো হয়, সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়েই গতকাল তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিলেন তাঁরা। ধৃত দুই তৃণমূল নেতারই বিস্ফোরণকাণ্ডে যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ NIA-র।
আগে দু’বার তলব করা হলেও দু’জনেই এনআইএ-র তলব এড়িয়ে গিয়েছেন। তৃণমূল নেতা বলাইচরণ মাইতির কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে NIA। এছাড়াও গতকাল ভূপতিনগরের পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু মোবাইল ফোন, ডায়েরি, রেজিস্ট্রার মিলেছে। অভিযুক্তদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে তা নাকচ করে দেয় NIA বিশেষ আদালত।