এ রাজ্যেও সংগঠন বিস্তার করছে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দা। গত সপ্তাহেই মুর্শিদাবাদ থেকে এনআইএ সন্দেহভাজন ছয় আল-কায়দা জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। তাদের ঘাঁটি থেকে উদ্ধার হয়েছে আইডি, পিস্তল সহ বহু নথি। পশ্চিমবঙ্গে আল-কায়দা সংগঠন বিস্তারের পিছনে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।
পুলিশের দাবি, জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) অন্যতম মাথা মহম্মদ সালাউদ্দিন ওরফে সালিহান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জেলা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদে বিভিন্ন সময়ে আস্তানা গেড়েছিল। তার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণও রয়েছে। উল্লেখ্য, মহম্মদ সালাউদ্দিন ২০১৬-তে বাংলাদেশে হোলি আর্টিসন কাফেতে জঙ্গি হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়াও এ পারে ২০১৪ সালে বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ও ২০১৮ সালে বোধগয়া বিস্ফোরণে ঘটনায় সালাউদ্দিন জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।
বর্ধমান বিস্ফোরণের পর পরই এনআইএ, কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও রাজ্য গোয়েন্দা বাহিনী যৌথভাবে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তদের চিহ্নিত করেছিল। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গত কয়েক বছরে গ্রেফতার করা হয়েছে। যা এই অঞ্চলে ওই সংঘটনের প্রতিপত্তি বিস্তারের আভাস বলেই মনে করা হয়।
ভারতে নিষিদ্ধ জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ। সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বর্তমানে জেলে। তাই পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ বিস্তারে আপাতত পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকদেরই হাতিয়ার করেছে ওই নিষিদ্ধ সংগঠন। কেরালা বা অন্যা জায়গায় কর্মরত কম বয়সী শ্রমিকদের ব্রেন ওয়াশ করে, টাকার লোভ দেখিয়ে এই কাজে আনা হচ্ছে। জেলে থেকেও জেএমবি জঙ্গিরা আদর্শ ছড়িয়ে এদের দিয়ে শূন্যস্থান ভারনোর কাজ চালচ্ছে বলে মনে করছে এনআইএ।
আরও পড়ুন- আরও দুই সন্দেহভাজনের আল-কায়দা যোগ! সন্ত্রাসের জাল ছড়িয়ে মালদাতেও
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে আল-কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ধৃত ছয়জনকে জেরা করে আর দুই সন্দেহভাজনের হদিশ পেয়েছেন এনআইএ গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মালদা জেলার বাসিন্দা ওই দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি আল-কায়দার সঙ্গে যুক্ত। মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত ছয়জনকে দিল্লিতে তিনটি আলাদা বিমানে করে নিয়ে গেছেন গোয়েন্দারা। সেখানেই জেরার মুখে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার রেডারে থাকা ওই দুই সন্দেহভাজন গত বৃহস্পতিবার রাতেই মুর্শিদাবাদে ধৃত ছয়জনের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিল। তারপর থেকেই তারা বেপাত্তা। এনআইএ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজনদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ধৃতদের সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকার জঙ্গিদের যোগসাজশ রয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
গত সপ্তাহেই বাংলা ও কেরালায় অভিযান চালিয়ে ন'জন আল-কায়দা সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। পাকিস্তান স্থিত আল-কায়দার সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে এরা অনুপ্রানিত হয়েছিল বলে জানায় এনআইএ। দিল্লি সহ দেশের নান প্রান্তে নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পানা ছিল ধৃতদের।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন