এনআরএস মেডিকেল কলেজে রোগী মৃত্যুর জেরে ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের উপর ভয়ঙ্কর হামলা তৃণমূলের নেতৃত্বেই হয়েছে, বিস্ফোরক দাবি মুকুল রায়ের। মঙ্গলবার বিকালে বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে মুকুল রায় বলেন, "এই ঘটনায় একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে গার্ড করতে চাইছে তৃণমূল"। নিগ্রহকারীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, এদিন সেই প্রশ্নও তোলেন মুকুল রায়।
প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে নীলরতন সরকার হাসপাতলে ভর্তি করা হয় বছর আশির মহম্মদ শাহিদকে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এদিন বিকেলের পর থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, চিকিৎসকদের ডাকাডাকি করলেও তারা কেউ সময় মতো আসেন নি। পরিবারের কথায়, চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয় মহম্মদ শাহিদের। তারপরই ট্রাকে করে হাসপাতাল চত্বরে লোক ঢুকিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মল্লিকবাজার ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর খুলিতে চরম আঘাত লেগেছে। আজ অস্ত্রোপচার হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: ‘বন্ধ’ এনআরএস, নিগ্রহের জেরে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতিতে সরকারি ডাক্তারেরা
এদিন সকাল থেকে নিরাপত্তার ও রোগীর পরিবারের শাস্তির দাবিতে গেট আটকে বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র ও সিনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় ডাঃ নীলরতন সরকার হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা। হাসপাতাল চত্বরে নামানো হয় র্যাফ। জুনিয়র এবং সিনিয়র ডাক্তারেরা এদিন হাসপাতালের মূল দরজায় ধর্নায় বসেন। এই ঘটনার পর এনআরএসের পাশে দাঁড়ান শহরের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও। এদিন হাসপাতালে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাসের সঙ্গে প্রায় আধঘন্টা বৈঠক করেন মন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
এদিন ধর্নারত ডাক্তারদের সঙ্গেও আলোচনা করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। তবে গোটা ঘটনায় এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি মেলেনি। সূত্রের খবর, এনআরএসের ঘটনার জেরে রাজ্যজুড়ে সব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাই কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। গেট থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীকে। মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে অন্য হাসপাতালে যাচ্ছেন রোগীর পরিবার। হাসপাতালের অধ্যক্ষ, সুপার, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং হলেও এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় নি।