সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ, নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় আপাতত রাজ্য পুলিশই তদন্ত চালিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তীতে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা হাইকোর্ট ঠিক করবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পরামর্শ, পুলিশের নথি খতিয়ে দেখে তবেই তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত কলকাতা হাইকোর্টের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কনভয়ে হামলার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল। দিনহাটার ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের নিশানায় ছিল বাংলার শাসকদল। আর তৃণমূলের দাবি, ওটা দিনহাটার সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেছে বলে অভিযোগ করে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পদ্ম বাহিনী।
এরপর সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিল বিজেপি। সেই মামলায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। পালটা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য।
কয়েক মাস আগেই কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িতে হামলা ও মারধরের অভিযোগে বেশ কয়েকটি এফআইআর হয়েছিল। সেই সব তথ্যই এদিন আদালতে পেশ করা হয়। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, আপাতত রাজ্য পুলিশ ওই মামলায় তদন্ত করবে। পরবর্তীতে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা হাইকোর্ট ঠিক করবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।।
এদিন শীর্ষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। যাতে অস্বস্তিতে পড়ল বঙ্গ বিজেপি। আপাতত সিবিআই তদন্ত নয় বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলা ফেরত গেল কলকাতা হাইকোর্টে। উচ্চ আদালতই নির্দেশ দেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কনভয়ে হামলার তদন্ত রাজ্য পুলিশ করবে নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর দিনহাটার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেছেন, 'শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। প্রথম থেকেই আমরা বলছিলাম যে, সেদিনের ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার চলছে। যারা সেদিন আক্রমণ করেছেন, পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছেন তারাই যাচ্ছেন সিবিআইয়ের আায় আদালতে। এই নির্দেশের পর প্রামাণ হল যে মিথ্যা একটা উচ্চতায় যেতে পারে কিন্তু একেবারে উচ্চস্থানে মিথ্যার কোনও স্থান নেই।'
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, 'এই নির্দেশই জানাচ্ছে কোনও হওয়া উচিত ছিল, আর কী হয়েছে। আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কলকাতা হাইকোর্টের একটা অংশ চাইছে রাজ্যকে খাটো করে দেখানো হোক। এই প্রবণতা আশঙ্কার। বিরোধীদের সময়িক উৎফুল্ল করে তোলে।'