একদিকে যখন দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। নতুন করে আংশিক লকডাউনের পথে গিয়েছে একাধিক রাজ্য। তখন বাংলায় ভোটের আগে স্বস্তির বার্তা দিল স্বাস্থ্য দফতর। দফতরকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডের জেরে কোনও মৃত্যু নেই। গত একবছরে এটাই প্রথমবার করোনা সংক্রমণের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। তবে স্বস্তির এই খবরের মধ্যে আশঙ্কা থাকছেই।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত রবিবারের কিছুটা কম হলেও চিন্তা বাড়াল মহারাষ্ট্র। উদ্ধব রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৮২৯৩ জন। দেশে সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৫১০। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কেরল, সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ২৫৪। পাঞ্জাবে একদিনে আক্রান্ত হয়েছে ৫৭৯ জন।
দেশে দৈনিক মৃত্যুও বেড়েছে অনেকটাই। রবিবার মৃত্যু হয়েছে ১০৬ জনের। দেশে মোট মৃত্যু সংখ্যা পেরিয়েছে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার। বর্তমানে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৮ হাজার। জানুয়ারির শেষে শেষবারের মত এমন পরিসংখ্যান ছিল। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে করোনার দাপট ক্রমশ কমলেও ফের উঠল কোভিড ঝড়।
মহারাষ্ট্রের বিদর্ভে গত ৩ মাসে রেকর্ড করোনা সংক্রমণ হয়েছে বলে জানা গিেয়ছে। হিঙ্গোলিতে নতুন করে লকডাউন জারি করা হয়েছে। এদিকে তামিলনাড়ুও লকডাউনের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে, আজ কোভিড টিকা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিস্টার পি নিভেদা সোমবার মোদীকে ভারত বায়োটেকের প্রুস্তুত করা কোভ্যাক্সিন টিকার প্রথম ডোজ দেন প্রধানমন্ত্রীকে। টুইটে মোদী লেখেন, “এইমসে আমি কোভিড টিকার প্রথম ডোজটি নিলাম। যারা কোভিড টিকা নেওয়ার জন্য নিজেদের মনোনীত করেছেন তাঁদের সকলকে আমি টিকা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন আমরা ভারতকে কোভিড-মুক্ত করে তুলি।”
অন্যদিকে, টিকাকরণে সরকারের ভূমিকা নিয়ে এবার তোপ দাগলেন বায়োকন (Biocon) চেয়ারপার্সন কিরণ মজুমদার শা। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাদের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করা হয়েছে এমনটাই বললেন বায়োকন সংস্থা প্রধান। ভ্যাকসিনের উপর যেভাবে ক্যাপিং করা হয়েছে সেই বিষয়টি নিয়েই মুখ খুলেছেন তিনি।
বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ভ্যাকসিনের দাম ২৫০ টাকা ধার্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে করোনার টিকার জন্য সর্বোচ্চ আড়াইশো টাকা নেওয়া যাবে। আর এই প্রেক্ষিতে কিরণের টুইট, “আমরা দেশে ভ্যাকসিন শিল্পকে উৎসাহিত করার বদলে পিষে মেরে ফেলছি।”
দ্বিতীয় দফায় চাইলে যে বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও করোনার ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে, তা ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। তবে দাম বেঁধে দেওয়া হয় ২৫০ টাকা। এই প্রসঙ্গে কিরণ বলেন, “কোভিড ভ্যাকসিনের দাম বেঁধে দিয়ে যেভাবে ক্যাপিং করল সরকার এটা বিশ্বাসঘাতকতার কাজ। এটা অত্যন্ত কম মূল্য ধার্য করেছে, যা ভ্যাকসিন ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভাল নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে ৩ মার্কিন ডলার দাম ধার্য করেছে সেটিকে কমিয়ে কেন ২ মার্কিন ডলার করা হল?” উল্লেখ্য, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কোভিডের টিকা নিতে খরচ পড়বে ২৫০ টাকা। এর মধ্যেই ধরা আছে ১০০ টাকা সার্ভিস চার্জ। সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে অবশ্য টিকাকরণ হবে বিনামূল্যেই।
দেশব্যাপী বর্ধিত সংক্রমণের মধ্যে বাংলায় সুখবর, ২৪ ঘণ্টায় নেই কোনও কোভিড মৃত্যু
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন