Statement of Health Secretary On Bird Flu: ৫ বছর পর দেশে ফের বার্ড ফ্লু ঘিরে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা এক চার বছরের শিশুর শরীরের মিলেছে H9N2 ভাইরাসের স্ট্রেন। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, এতে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবারই স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল মালদায় যান।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর সংস্পর্শে আসা কোন ব্যক্তির দেহে মেলেনি বার্ড ফ্লু ভাইরাসের স্ট্রেন। সুতরাং মানবদেহ থেকে মানবদেহে সংক্রমণের কোন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী হাঁস মুরগির ডিম, মাংস খাওয়াতেও কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেই মূলত শিশুরা H9N2 ভাইরাসের আক্রান্ত হন।
স্বাস্থ্য সবিচ নায়ারণস্বরূপ নিগম বলেছেন, 'কড়া নজরদারি চাললানো হলেও হাস, মুরগির মধ্যেই বার্ড ফ্লু' ভাইরাস ধরা পড়েনি। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেই রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। এছাড়া হাঁস-মুরগির মাংস, কিংবা ডিম খাওয়া নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা কিংবা সতর্কবার্তাও নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি'।
অসময়ে মালদায় মানবদেহে বার্ড-ফ্লু আতঙ্কে রীতিমতো হৈচৈ পরে গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : < TMC candidate list: চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা তৃণমূলের, কোন আসনে কে প্রার্থী? >
যদিও প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, পশুপাখি এবং মানবদেহে কোনরকম বার্ড-ফ্লু'র ঘটনা ঘটে নি। পুরনো একটি ঘটনার রিপোর্ট পুনের এনআইভি (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি) থেকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে মালদার কালিয়াচকের এক শিশুর শরীরে পশুপাখির মধ্যে থাকা এইচ-নাইন.এন-টু নামক একটি ভাইরাস মিলেছে। তাও সেটি ছয় মাস আগের ঘটনা, যা বুধবার স্বাস্থ্য দপ্তরকে পুনে থেকে রিপোর্টে পাঠানো হয়েছে।
বার্ড-ফ্লু বলে কোনো অসুখ মানবদেহে এখনো পর্যন্ত এরাজ্যে কোথাও হয় নি। বার্ড-ফ্লু'র হলে এইচ-ফাইভ.এন ওয়ান ভাইরাস রক্তের নমুনা থেকে পাওয়া যেত। কিন্তু সেটা পুনের চিকিৎসক বিজ্ঞানীদের সেই রিপোর্টে উল্লেখ নেই। তবে এই ধরনের ঘটনাকে ঘিরে অযথাই বার্ড-ফ্লু গুজব যাতে কোথাও কেউ না ছড়ায় সে ব্যাপারেও রীতিমতো সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং প্রশাসন।
আরও পড়ুন : < Body Recover of a Minor: অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে নাবালক খুনের ভয়ঙ্কর অভিযোগ, বারাসাতে ধুন্ধুমার, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি >
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে কালিয়াচক থানার আলিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চার বছরের অসুস্থ এক শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে মহারাষ্ট্রের পুনেতে পাঠানো হয়েছিল। ছয় মাস পর ওই শিশুর সেই রক্তের নমুনার রিপোর্ট এদিন এসেছে। তাতে বলা হয়েছে বার্ড-ফ্লু নয়, তবে পশু পাখির মধ্যে এইচ নাইন.এন-টু জাতীয় একটি ভাইরাস ওই শিশুর শরীরে পাওয়া গিয়েছে। আর যাকে ঘিরেই রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে মালদার বিভিন্ন মহলে। অযথা আতঙ্ক ছড়ানো অথবা সামাজিক মাধ্যমে বার্ড-ফ্লু গুজব ছড়ানো হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, মুরগি সহ বিভিন্ন ধরনের পাখি থেকে মূলত বার্ড-ফ্লু জাতীয় ভাইরাস ছড়ায়। এই ধরনের সংক্রামণ শীতের মরশুমে দেখা যায়। মালদায় বার্ড-ফ্লু হলেও, মানবদেহে এই ধরনের সংক্রমণ এখনো পর্যন্ত এই রাজ্যে কোথাও পাওয়া যায় নি। মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুদীপ্ত ভাদুড়ি জানিয়েছেন, এইচ-নাইন.এন টু ভাইরাসটি পশু - পাখির মধ্যে লিংক থাকে। যেটি কালিয়াচকের ওই চার বছরের শিশু শরীরে সেই সময় পাওয়া গিয়েছিল। এখন কেসটি অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। এখন সবকিছুই স্বাভাবিক আছে। বার্ড-ফ্লু'র ক্ষেত্রে এইচ-ফাইভ. এন-ওয়ান ভাইরাস উৎপত্তি হয়। কাজেই এনিয়ে অযথা বিতর্ক অথবা গুজব ছড়ানো উচিত নয় ।
কালিয়াচকের ওই শিশুর রিপোর্ট যে পাঠানো হয়েছে সেটি জানুয়ারি মাসের । এতদিনে সেই কেস পুরনো হয়ে গিয়েছে। কালিয়াচকের শিশুটি অনেকদিন আগেই সুস্থ স্বাভাবিকভাবেই ফিরে গিয়েছিল। রক্তের নমুনার পাঠানোর অনেক পুরনো রিপোর্ট দেরি করেই আসে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।