রাজনীতি থেকে সন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পদ থেকে আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু শাসক দল তাঁকে ছাড়তে নারাজ। এবার পাকাপাকিভাবে দল ছেড়ে ঠাকুরের আদর্শ প্রচারের জন্য সময় দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন নাম বিভাসচন্দ্র অধিকারী।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে দিন কয়েক থেকেই সংবাদের শিরোনামে তৃণমূলের বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি বিভাসচন্দ্র অধিকারী। ইতিমধ্যেই তাঁর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। রাজনীতির সঙ্গেই ধর্মকর্মেও দারুন আগ্রহী বিভাস। নিজের গ্রাম বীরভূমের কৃষ্ণপুরে ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের সুবিশাল আশ্রম গড়ে তুলেছেন তিনি। ঠাকুরের জন্মস্থান বাংলাদেশের হিমাইতপুর গ্রামের মন্দিরের আদলে এই মন্দির গড়ে তুলেছেন। তাই গ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে নব-হিমাইতপুর। আপাদমস্ত ঠাকুর ভক্ত বিভাস সিউড়ি সদরের চন্দ্রপুর গ্রামেও ঠাকুরের আরেকটি আশ্রমের পাশাপাশি একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেসবের জমি কেনাবেচার জন্য রাজস্ব মকুব করে দিয়েছেন।
কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না বিভাস চন্দ্র অধিকারীকে। মাস দু'য়েক আগে তার কলকাতার বৈঠকখানা রোডের বাড়ি ইডি সিল করে দিয়েছিল। মঙ্গলবার সেই বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছে। বিভাসবাবু বলেন, 'ইডি আমার সমস্ত কাগজপত্র দেখে খুশি। তারা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোন যোগ নেই। আমি সিবিআই এবং ইডির তদন্তে খুশি। আমাকে যতবার ডাকা হবে আমি হাজিরা দিতে প্রস্তুত। তবে আবারও বলছি আমি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত নই। যাঁরা আমার নাম মুখে আছেন তাঁরা আমাকে চেননও না। আমিও তাঁদের চিনি না। তবে আমার ডিএড কলেজ থাকার সুবাদে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।'
দুর্নীতিক চক্রব্যুহে রাজনীতিতে যেন ক্রমশ আগ্রহ হারাচ্ছেন বিভাসবাবু। রাজনীতিতে সন্যাস নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'রাজনীতি এবং ঠাকুরের সেবা একসঙ্গে হয় না। তাছাড়া ঠাকুর বলেছিলেন আর্য ভারতবর্ষ গঠন করতে হবে। ২০১৯ সালে আমার বড়সড় পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠাকুরের কৃপায় বেঁচে রয়েছি। এখনও আমার চিকিৎসা চলছে। এবার পাকাপাকিভাবে দল ছেড়ে ঠাকুরের আদর্শ প্রচারের জন্য সময় দেব।'
কলকাতার বাড়ি সিল খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে বিভাসবাবু বলেন, 'ওই ফ্ল্যাট ঠাকুরের নামে রয়েছে। গ্রাম গঞ্জ থেকে যে সমস্ত সদস্য চিকিৎসা জন্য কলকাতায় যায় তাঁদের ওই ফ্ল্যাট মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়। তাছাড়া আমিও চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওখানেই থাকি। তাই ইডির কাছে ফ্ল্যাটের সিল খুলে দেওয়ার আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইডি ফ্ল্যাটের সিল ভেঙে খুলে দিয়েছে।'