scorecardresearch

কুয়ো থেকে তোলা হল জ্য়ান্ত চিতাকে, অভব্য় আচরণ স্থানীয়দের

জাল ফেলে ধরে ওপরে তুলতে গেলে চিতাবাঘটি হকচকিয়ে যায়। হুটোপুটির ফলে বার দুয়েক ফের জলে পড়ে যায়। প্রায় ঘন্টা পাঁচেকের প্রচেষ্টায় বিকেলের দিকে চিতাকে উপরে তুলে খাঁচাবন্দী করতে সক্ষম হয় বনকর্মীরা।

leopard, duars
ডুয়ার্সে খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ। ছবি- সৌমিত্র সান্য়াল

উদ্ধার করা হলেও নিস্তার পেল না চিতাবাঘ। বন দফতরের কর্মীদের সামনেই সিটি বাজিয়ে, খোঁচা দিয়ে রীতিমত উত্যক্ত করা হল উদ্ধার হওয়া পরিশ্রান্ত চিতাবাঘটিকে। সোমবার ভোরে শিকার করতে এসে ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকার একটি প্রজেক্ট টি গার্ডেনের ভিতরে থাকা একটি কুয়োতে কোনওভাবে পড়ে যায় ‘সাব-অ্যাডাল্ট ফিমেল লেপার্ড’টি। এরপরই জলে পড়ে খাবি খেতে থাকে চিতাবাঘটি।

এদিন সকালে অন্য দিনের মতোই চা বাগানের শ্রমিকরা চা গাছে জল দেবার জন্য কুয়োর কাছে যায়। এরপর কুয়োর দিকে তাকাতেই হতবাক হয়ে যান শ্রমিকরা। তাঁরা দেখেন, একটি চিতাবাঘ লাফাচ্ছে এবং গর্জন করছে। ওই দৃশ্য দেখে জল তোলার বালতি ফেলে রেখে ছুটে পালায় শ্রমিকেরা। খবর যায় কাঠামবাড়ি বন দফতরে। এই খবর শুনে ছুটে আসেন বনকর্মীরা। কিন্তু কুয়োটি প্রস্থে সংকীর্ণ হওয়ায় শুরু হয় ট্রাংকুলাইজিং-এর সমস্যা। উদ্ধারের কাজ দেরি হতে থাকায় অবশেষে বনকর্মীরা সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথমে কুয়োটিকে জাল দিয়ে ঘেরা হবে। এরপর কুয়োতে জাল ফেলে চিতাটিকে ধরা হবে। কিন্তু, জাল ফেলে ধরে উপরে তুলতে গেলে চিতাবাঘটি হকচকিয়ে যায়। চিতার ছটফটানিতে কিছুটা তোলার পরও বার দুয়েক জলে পড়ে যায় সে। এরপর প্রায় ঘন্টা পাঁচেকের প্রচেষ্টায় বিকেলের দিকে চিতাটিকে উপরে তুলে খাঁচাবন্দি করতে সক্ষম হন বনকর্মীরা।

মালবাজার ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াড-এর রেঞ্জার বিভূতিভূষণ সাহা জানান, পাশেই বৈকন্ঠপুরের জঙ্গল। সম্ভবত সেখান থেকেই খাবারের সন্ধানে এখানে এসে কুয়োতে পড়ে গেছে চিতাবাঘটি। কিন্তু উদ্ধার করতে গিয়ে কুয়োটি সংকীর্ণ হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় বনকর্মীদের। যদি চিতাবাঘটিকে ট্রাংকুলাইজ করা হত, তবে কুয়োয় নেমে সেটিকে তোলা যেত না। তাই বাধ্য হয়ে জাল দিয়ে ধরা হয়।

এদিকে, উদ্ধার প্রক্রিয়া দেখতে উৎসাহী মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। এলাকা কার্যত মেলার চেহারা নেয়। ভিড় সামলে উদ্ধার কাজ চালাতে সমস্যায়ও পড়েন বন দফতরের কর্মীরা। উদ্ধার করা চিতাকে খাঁচাবন্দি করলে সেই খাঁচার সামনে এসে নানাভাবে চিতাবাঘটিকে উত্যক্ত করতে থাকে অতিউৎসাহীরা। সিটি বাজানো, খাঁচায় খোঁচা দেওয়া, সবই চলতে থাকে। অথচ বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী তা অপরাধ।

এই ঘটনায় বন্যপ্রাণ সচেতনতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী রক্ষার্থে ১৪৪ ধারা প্রয়োগের অভাবের করুন চিত্রও দেখা গেল বলে মনে করছে একাংশ। এই ঘটনায় পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ‘স্পোর’-এর সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পান্ডে ক্ষোভের সঙ্গে জানান, “বন্যপ্রাণীদের রক্ষার জন্য ১৪৪ ধারা-সহ বিভিন্ন আইন আছে। তা প্রয়োগ করার কথা ল এনফোর্স এজেন্সিগুলোর। কিন্তু অধিকাংশ সময় তাদের নেতা, মন্ত্রী বা পাবলিক রিলেশনের কাজেই ব্যস্ত হয়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়ে এই আইন ব্যবহার করলে প্রাণহানি-সহ অন্যান্য ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে মনে হয়।”

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: North bengal duars leopard trouble