/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/16/suvendu-2025-09-16-15-34-34.jpg)
Suvendu Adhikari: শুভেন্দু অধিকারী।
প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ, দুর্যোগে দার্জিলিংয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। আটকে পড়েছেন হাজারে হাজারে পর্যটক। বন্ধ রয়েছে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র। আপাতত পর্যটকদের হোটেলে থাকার পরামর্শ জারি করেছে জিটিএ। এদিকে আগামী কয়েকদিন উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পুর্বাভাস জারি করা হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে এর মাঝেই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দুর্গম এলাকায় যাতে দ্রুত ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায় সেই আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, "উত্তরবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ের মত পার্বত্য অঞ্চল ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধস ও বন্যার কারণে শিলিগুড়ি, ডুয়ার্সের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ দুর্যোগে আটকে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় খাদ্য, জল, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে মারাত্মক সমস্যার মুখে পড়েছেন তারা। ইতিমধ্যেই কয়েকজনের মৃত্যুর খবর এসেছে, যদিও সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। আমি মুখ্যসচিবকে আহ্বান জানাচ্ছি যেন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়"।
Due to the incessant heavy rainfall in North Bengal, the hilly regions of Darjeeling, Kalimpong, and Kurseong have been severely affected, with communication and transport links to the plains of Siliguri, Terai, and Dooars almost completely disrupted due to landslides and… pic.twitter.com/ugkbLrTmQr
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) October 5, 2025
বিরোধী দলনেতা রাজ্য প্রশাসনকে অনুরোধ করে লিখেছেন, "অবিলম্বে সরকার বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। এলাকাগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে স্বাভাবিক করা যায় তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক"। পাশাপাশি সেখানকার মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য ও জল পৌঁছে দিতেও অনুরোধ করেছেন শুভেন্দু।
প্রবল বৃষ্টিতে দার্জিলিংয়ে ভূমিধস ও সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত্যু মিছিল। বহুস্থানে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর মাঝেই আগামীকাল উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। আগামীকালই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব। জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বালাসন, তিস্তা, তোর্ষা, জলঢাকা, রায়ডাক, সংকোশ সহ সমস্ত নদীতে বেড়েছে জলস্তর। মিরিক, দুধিয়া, সুখিয়াপোখরি, নাগরাকাটা, বানারহাট, রামসাই এলাকা বর্ষণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় নেমেছে ধস। দুধিয়ায় লোহার সেতু ভেঙে দার্জিলিং, মিরিক সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, কোচবিহার, দিনহাটার বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ছে।
টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে আলিপুরদুয়ারও। বক্সা টাইগার রিজার্ভের সমস্ত সাফারি বাতিল করা হয়েছে। শালকুমারহাটের শিসামারা নদীর বাঁধ ভেঙে হুহু করে জল ঢুকছে নেপালিবস্তি, নতুনপাড়া, জলদাপাড়া বাজারে। প্রায় এক হাজার মানুষ জলবন্দি। কামাখ্যাগুড়িতে একাধিক বাড়ি জলমগ্ন। দুর্যোগের জেরে বহু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুসারে, আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জেলাগুলি, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় রবিবার সকাল পর্যন্ত অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের কারণে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর (IMD) জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে সোমবার সকাল পর্যন্ত বাংলার বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি আনার সম্ভাবনা রয়েছে। IMD এর বিশেষ বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, আলিপুরদুয়ারসহ উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।