পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। এই নিয়ে দিল্লি পর্যন্তও দরবার করেছে শাসকদল তৃণমূল। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি বাকযুদ্ধ চলছে বহুদিন ধরে। এমনকী লোকসভাতেও বঞ্চিতদের টাকা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলের সংসদীয় দল। এবার তৃণমূল সাংসদ দেবের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যা উত্তর দিলেন তাতে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপিরই।
ঘাটালের সাংসদ দেব লিখিতভাবে জানতে চেয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে রাজ্যওয়াড়ি কত ভুয়ো জব কার্ড বাতিল হয়েছে। মঙ্গলবার এই প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন সাধ্বী জানান, দুই অর্থবর্ষে দেশে যে ভুয়ো জব কার্ড বাতিল হয়েছে তাতে শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ। যোগীরাজ্যে অনেক বেশি সংখ্যায় জব কার্ড বাতিল হয়েছে। তুলনায় অনেক কম বাংলায়। অনেক বেশি সংখ্যায় জব কার্ড বাতিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই উত্তর পেয়েই হাতে অস্ত্র পেয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, অবিলম্বে কুৎসা বন্ধ হোক। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সারা দেশে ভুয়ো জব কার্ড বাতিল হয়েছে ১০ লক্ষ ৫০ হাজারের একটু বেশি। শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, তিন লক্ষ ৬৪ হাজারের মতো। দুইয়ে আছে ওড়িশা, সেখানে ১ লক্ষ ৬৫ হাজারের মতো। এর পর রয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং বিহার। আর বাংলায় মমতা সরকারের আমলে ভুয়ো জব কার্ডের সংখ্যা ৫,৬৫১টি মাত্র।
আরও পড়ুন ‘মোদী চোর-শাহ চোর’ স্লোগানের জের! তৃণমূলের ৬০ মন্ত্রী-বিধায়কের বিরুদ্ধে FIR বিজেপির
বাংলার উপরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান। ঝাড়খণ্ডে বাতিল হওয়া জব কার্ডের সংখ্যা ৯৪ হাজার ২০১টি। রাজস্থানে ৬০ হাজার ৪২৮টি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, ভুয়ো কার্ড বাতিল এবং আপডেট করা একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। রাজ্যগুলি নিয়মিত এই অনুশীলন করে। ভুয়ো কার্ড রুখতেই আধার লিংক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
১০০ দিনের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে, এই অভিযোগ তুলে রোজই মুখ্যমন্ত্রী-সহ শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লির অভিযানও করেছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষের দাবি, ভুয়ো জব কার্ডের গল্প বিজেপি বলছে তা ভিত্তিহীন। টাকা আটকানোর মানদণ্ড যদি ভুয়ো কার্ড হয় তাহলে তো যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশের টাকা আগে বন্ধ করা উচিত। কিন্তু বাংলার মানুষকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে রাজনীতি করছে বিজেপি।