ঠিক যেন তাঁর পিসি তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁর পিসির মতই সংস্কৃত স্তোত্রপাঠ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মহালয়ার বিকেলে শনিবার এক নতুন রূপে দেখা গেল তৃণমূলের এই অঘোষিত সেকেন্ড ইন কমান্ডকে। দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে ছিল দলীয় মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র উৎসব সংখ্যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
সেখানেই চণ্ডীর স্তোত্র উচ্চারণ করতে শোনা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ উচ্চারণ করলেন, 'ইয়া দেবী সর্বভূতেষু…।' যা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের বলতে শোনা গেল, অতীতে এত বড় অনুষ্ঠানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও স্তোত্রপাঠ করেছেন বলে তাঁদের মনে পড়ছে না। ঘরোয়া অনুষ্ঠানে অবশ্য একাধিকবার করেছেন। তবে, ওই পর্যন্তই।
এর আগে চলতি অক্টোবরেই ২ থেকে ৯ তারিখ চরম ব্যস্ততায় কাটিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই অন্যতম শীর্ষ নেতা। কখনও দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার সময় তাঁর নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। কখনও দিল্লির যন্তর-মন্তরে তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ধরনা দেখিয়েছে। কখনও আবার দিল্লির কৃষিভবন থেকে তাঁর নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের প্রতিনিধিদের জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ।
ফিরে কলকাতা শহরে রাজভবনের সামনে মঞ্চ বেঁধে তিনি রাজ্যবাসীর দাবি আদায়ের জন্য ধরনা দিয়েছেন। তারপরই এবার স্তোত্রপাঠের মাধ্যমে নজর কাড়লেন তৃণমূলের এই দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা। যাঁরা রাজভবনের সামনে রেড ক্রস প্লেসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনার মধ্যে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় ধর্মতলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনার ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন, তাঁরা যেন ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়া নতুন করে শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে দেখতে পেলেন।
আরও পড়ুন- অভিষেকের মা’য়ের কাঁধে ভর দিয়েই আসনে মমতা! বললেন- ‘জীবন-মৃত্যু মধ্যে লড়ছি’
তবে, এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না-থেকেও ছিলেন। এবছর পায়ের চোট এবং সংক্রমণের কারণে দলের উৎসব সংখ্যা বাড়ি থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে তিনি উদ্বোধন করেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাজ্যবাসীকে উৎসবের মরশুমে প্ররোচনায় পা না-দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপি নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে বলেন, 'যাঁরা বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে আক্রমণ করেছেন। এরাজ্যে দুর্গাপুজো হয় কি না, তা-ই জানতেন না। তাঁরাই বাংলার ঐতিহ্যের কাছে মাথানত করেছেন। এরাজ্যে পুজো উদ্বোধন করতে আসছেন। যা বাংলার ঐতিহ্যের জয়।'