করোনা লকডাউনে অন্ধকার ঘনিয়েছিল। বন্ধ হয়েছিল চাষ, বালি তোলার কাজ। যৎসামান্য সঞ্চয় প্রায় তলানীতে ঠেঁকেছিল। সংসার চালানোই দুস্কর হয়ে উঠেছিল পূর্ব বর্ধমানের বেরুগ্রামের কাকলী ও তাঁর স্বামী নন্দ রায়ের। দুই ছেলে ও মা-কে নিয়ে মোট পাঁচ জনের সংসার। কিন্তু, তাঁদের মুখে অন্ন জোটাতে হিমশিম অবস্থা নন্দর। এই সময়ই আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে একশ দিনের কাজ। নন্দ রায়ের পাশাপাশি এখন কাজে যান তাঁর স্ত্রী কাকলীও। আপাতত দৈন দশা কেটেছে।
নন্দর একশ দিনের জবকার্ড আগে থেকেই ছিল। কিন্তু, প্রয়োজন না হওয়ায় এতদিন কাকলী তা করায়নি। তবে, লকডাউনের মধ্যেই জবকার্ডের আবেদন জানান কাকলী। পঞ্চায়ের তচরফে তা মিলেছেও। এখন মাসে ১০ দিন কাজ করে ২,০৪০ টাকা রোজগার করেন তিনি। স্বামী নন্দ রায়ের রোজগার ৪,০৮০ টাকা। স্মামী-স্ত্রীর রোজগারে আপাতত সংসার চলছে কোনওমতে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় দুই ছেলেকেই টিউশনে পাঠাতেও পারছেন এঁরা।
এটা শুধু পূর্ব বর্ধমানের নয়, ভারতজুড়েই এই ছবি ধরা পড়েছে। গোটা দেশে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ বছরে ৮৩ লক্ষ পরিবারের কাছে জবকার্ড পৌঁছেছে। যা গত সাত বছরে সর্বোচ্চ। পূর্ব বর্ধমানে একশ দিনের কাজে এই ক'মাসে ১৬,৭০০ নতুন জবকার্ড দেওয়া হয়েছে। তালিকায় যা দেশের যেকোনও জেলার তুলনায় অগ্রগণ্য।
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পও এই সময়কালে গ্রামীণ ও শহরের অপেক্ষাকৃত চাহিদাসম্পন্ন পরিবারগুলোর সহায়ক হয়েছে।
তবে, পশ্চিমবঙ্গের মত রাজনৈতিকভাবে মেরুকৃত রাজ্যে একশ দিনের কাজ বন্টন, জবকার্ড দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন রয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েতমন্ত্রীর বক্তব্য, 'এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জবকার্ড বিলি করা হয়েছে। আমরা রাজনীতি নয়, মানুষের উপকারের প্রতি নজর দিয়েছি।' বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের তরফেই নতুন ৬৩৮ জবকার্ড দেওয়া হয়েছে। মোট জবকার্ডের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন