Advertisment

নীলরতনের ঢেউ জাতীয় স্তরে, রাজ্যের ডাক্তারদের পাশে আইএমএ

"আন্দোলন যে স্তরে ছিল সেই স্তরেই আছে। দুই ট্রাক ভর্তি লোকের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করলেই কাজ সারা হয়ে যাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদি ভেবে থাকেন তাহলে সেটা ভুল।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আন্দোলন জারি রাখল এনআরএসের ডাক্তাররা

নিরাপত্তার দাবি না মিটলে আর রাজ্য স্তরে নয়, এবার জাতীয় স্তরে কর্মবিরতির ডাক দিতে পারেন ডাক্তাররা। বুধবার নীলরতন সরকার হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে ছিলেন রাজ্যের সমস্ত সিনিয়র ডাক্তার, এবার রাজ্যের প্রতিবাদী চিকিৎসকদের সঙ্গে হাত মেলাল অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল ‌অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

Advertisment

ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে ছত্রিশ ঘণ্টার বেশি সময়। দফায় দফায় বৈঠক হলেও, এখনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি। নীলরতন সরকার হাসপাতালের অধ্যক্ষ আন্দোলনরত তিন-চারজনকে নিয়ে বৈঠক করতে চাইলেও, কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরে বৈঠকের প্রস্তাবও নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

kolkata nrs hospital agitation পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনায়। ছবি: পার্থ পাল, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আন্দোলনরত ডাক্তার অনিন্দ্য ধর বলেন, "আন্দোলন যে স্তরে ছিল সেই স্তরেই আছে। দুই ট্রাক ভর্তি লোকের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করলেই কাজ সারা হয়ে যাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদি ভেবে থাকেন তাহলে সেটা ভুল।" তিনি আরও জানান, "এটা কোনও ওয়ান-ডে ম্যাচ নয় যে প্রত্যেক ওভারে পরিকল্পনা বদলে যাবে। আমাদের দাবি, ১) নিরাপত্তা চাই; ২) দোষীদের গ্রেফতার করার পর চার্জশিট আমাদের দেখাতে হবে; ৩) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকুন এবং এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করুন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই; ৪) পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশদের দেখা পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার সর্বোচ্চ স্তরে তদন্ত চাই আমরা; ৫) সোমবার লাঠি চার্জ করে পুলিশ। রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করেছে তারা। আমরা সেই সব পুলিশের যথাযথ শাস্তি চাই।" তাঁরা কি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চান? ডাঃ ধরের সাফ জবাব, "আমরা তা চাই না। পদত্যাগে সমস্যা মেটে না।"

আরও পড়ুন: ‘বন্ধ’ এনআরএস, প্রতিবাদের আঁচ অন্য হাসপাতালেও, রাজ্যজুড়ে রোগীদের হাহাকার

বেলা গড়াতেই নীলরতন সরকারের হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ডাঃ শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আন্দোলনরত জুনিয়র ও সিনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, "অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের হেডকোয়ার্টার থেকে আমাকে পাঠানো হয়েছে, নীলরতন হাসপাতালের এই ঘৃণ্য ঘটনার পর আইএমএ হেডকোয়ার্টার চুপ করে বসে নেই। কাল রাত সাড়ে তিনটে অবধি সাধারণ সচিব এবং সভাপতি বৈঠক করেন। শুরু থেকে গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছি আমরা। এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আগামিকাল ভোরবেলায় আমাদের সাধারণ সচিব এবং জাতীয় স্তরের সভাপতি নীলরতন সরকার হাসপাতালে আসবেন"।

তিনি আরও বলেন, "এটা আর রাজ্যের সমস্যা নয়। এটি জাতীয় সমস্যার আকার ধারণ করেছে। কোনো রাজনৈতিক রঙ ছাড়াই এই আন্দোলন চলবে। আমি জানি না, আমার এই বার্তা কোন সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে, সে বিষয়ে পরোয়া করি না। নিজের পিঠের চামড়া রক্ষা করতেই আজ আমি এখানে এসেছি। আজ রাত অবধি যদি কোনও সমাধানের পথ দেখা না যায়, তাহলে আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে জাতীয় স্তরে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হবে"।

উল্লেখ্য, আন্দোলন যে জাতীয় স্তরে ছড়াতে পারে, তার আঁচ পাওয়া যায় অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এর রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গতকাল জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

publive-image
গতকাল ঘটনার তীব্র নিন্দা করে চিঠি দিল্লির AIIMS হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টরর্স অ্যাসোসিয়েশন

আরও পড়ুন: বাংলায় অশান্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ রাজপ্যালের, কাল রাজভবনে ৪ দলকে নিয়ে বৈঠক

রাজ্য ডক্টর্স ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বুধবার রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কোনোরকম পরিষেবা পাওয়া যাবে না। তবে, খোলা থাকবে জরুরি বিভাগ। এদিন সেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মবিরতিতে অনড় থাকেন রাজ্যের চিকিৎসকরা। তবে জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে বলা হলেও এই প্রতিশ্রুতি রাখা হয় নি বলে অভিযোগ। বেলা গড়াতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ করে দেওয়া হয় জরুরি বিভাগ। কিন্তু কেন বন্ধ জরুরি বিভাগ, এই প্রশ্ন করতেই বলা হয়, ডাক্তার নেই। রোগীদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এদিন শহর জুড়ে চিকিৎসার জন্য রোগী ও আত্মীয়দের চরম দুর্ভোগের ছবি ধরা পড়েছে।

STATE MEDICAL COLLEGES calcutta medical college
Advertisment