গেটে তালা পড়ল এনআরএস হাসপাতালে। মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর থেকে কার্যত বন্ধ হল ডাঃ নীলরতন সরকার হাসপাতালের সমস্ত পরিষবা। হাসপাতাল চত্বরে নামানো হয়েছে র্যাফ। জুনিয়র এবং সিনিয়র ডাক্তারেরা এদিন হাসপাতালের মূল দরজায় ধর্নায় বসলেন। অশীতিপর মহম্মদ সাইদের (রোগী) মৃত্যুর পর পরিজনদের হাতে ভয়ঙ্কর ভাবে প্রহৃত হয় ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়। এরপরই নিরাপত্তার চরম অভাব বোধ করায় পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতালের ডাক্তারেরা। এই ঘটনার পর এনআরএসের পাশে দাঁড়ায় শহরের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও। এ দিন হাসপাতালে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাসের সঙ্গে প্রায় আধ ঘন্টা বৈঠক করেন করেন মন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, প্রহৃত ডাক্তার কোমায় রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মল্লিকবাজার ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর খুলিতে চরম আঘাত লেগেছে। আজ তাঁর অস্ত্রপচার হয়। এখনও বিপদ মুক্ত নয় ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়। খুলির ডানদিকের কিছুটা অংশ ভিতরে ঢুকে টিসুর ক্ষতি করেছে। ৪৮ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন কলকাতার এক অভিজ্ঞ সরকারি চিকিৎসক।
নীলরতন সরকার হাসপাতালের গেটে রোগীদের ভিড়। এক্সপ্রেস ফটো: অরুণিমা কর্মকার
এদিন ধর্নারত ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। তবে গোটা ঘটনায় এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি মেলেনি। সূত্রের খবর, এনআরএসের ঘটনার জেরে রাজ্যজুড়ে সব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাই কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে। গেট থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে দুরদুরান্ত থেকে আসা রোগীকে। মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন রোগীর পরিবার।
মুমূর্ষ রোগীকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছে পরিবার। এক্সপ্রেস ফটো: অরুণিমা কর্মকার
এনআরএসের পাশে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
ইতিমধ্যে মালদা মেডিক্যাল কলেজেও কর্মবিরতি ডাক দিয়েছেন পড়ুয়া ও চিকিৎসকরা। বিকেল পাঁচটার সময় কলেজ প্রাঙ্গনে সমস্ত জুনিয়র সিনিয়র ডাক্তাররা জমায়েত হয়ে এনআরএসের ঘটনার প্রতিবাদ জানাবে। জানা যাচ্ছে, এদিন সকালে জরুরি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে মালদা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতির ডাক
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি
আপাতত, এসএসকেএমের আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। চিকিত্ৎসা না পাওয়ায়, হরিশ মুখার্জি রোডে রোগীর পরিবার অবরোধ করেছে বলে সূত্রের খবর। তবে পরিস্থতি স্থিতিশীল।
হাসপাতালের অধ্যক্ষ, সুপার, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও কলকাতা পুলিশ কমিশনরের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং হলেও এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। গতকাল রাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করায়, এন্টালির ওসির বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করেছে চিকিৎসকরা। সঠিক নিরাপত্তা না দিলে কর্মবিরতি চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।