মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসেও গলল না বিক্ষোভের বরফ। বদলালো না নীলরতন সরকার হাসপাতালের আন্দোলনের ছবি। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলনের ৩৬ ঘন্টা পরেও হাসপাতালে জারি অচলাবস্থা। স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, "মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বিষয়টি দেখছেন এবং প্রয়োজনীয় সবরকম পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। তিনি আবেদন জানিয়েছেন এই আন্দোলন তুলে নিয়ে হাসপাতালের পরিষেবাকে স্বাভাবিক করতে"।
আরও পড়ুন: এনআরএসে জারি অচলাবস্থা, অনড় চিকিৎসকরা
প্রসঙ্গত, ঘটনার প্রথম দিন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এনআরএসের সুপারের সঙ্গে দেখা করলেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন "বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। এখনই কোনও রকম মন্তব্য করতে চাই না।" এমনকি ঘটনার পর সরকারের তরফ থেকে কোনও রকম বিবৃতি পাওয়া দু’দিন কেটে যাওয়ার পর নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অচলাবস্থা কাটাতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। যেখানে বলা হয়েছে " জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনের জেরে ব্যাহত স্বাস্থ্য পরিষেবা, ভোগান্তিতে বহু সাধারণ মানুষ। এই আন্দোলনের কারণে অসুস্থ রোগীরাও কোনও রকম পরিষেবা পাচ্ছেন না। যা কখনোই কাম্য নয়। তাই অবিলম্বে পরিষেবাকে স্বাভাবিক করার আবেদন জানানো হচ্ছে"।
বিবৃতিতে বলা হয়, "এনআরএস হাসপাতালের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সবরকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের জামিন নাকচ করে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার। পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের পরিবার এবং ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য"।
প্রসঙ্গত, এবার জাতীয় স্তরে কর্মবিরতির ডাক দিতে পারেন ডাক্তাররা। বুধবার নীলরতন সরকার হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে ছিলেন রাজ্যের সমস্ত সিনিয়র ডাক্তাররা। রাজ্যের প্রতিবাদী চিকিৎসকদের সঙ্গে হাত মেলায় অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। নীলরতন সরকারের হাসপাতালে আসেন অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ডাঃ শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আন্দোলনরত জুনিয়র ও সিনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের হেডকোয়ার্টার থেকে আমাকে পাঠানো হয়েছে, নীলরতন হাসপাতালের এই ঘৃণ্য ঘটনার পর আইএমএ হেডকোয়ার্টার চুপ করে বসে নেই। গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছি আমরা’’।