আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকালে এনআরএস কাণ্ডের জট কাটাতে নবান্নে যান শহরের কিছু সিনিয়র ডাক্তার। উদ্দেশ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক, যা তাঁরই আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে আন্দোলনে অনড় থাকেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শুক্রবার জুনিয়ার ডাক্তারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, "মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন আমরা পদবী দেখে চিকিৎসা করি। ওঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তারপর আলোচনা করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী না এলে আন্দোলন উঠবে না।"
যেমন কথা, তেমন কাজ। এনআরএস কাণ্ডের রেশ দেশ জুড়ে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ায় তুমুল অস্বস্তি গ্রাস করছে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে, এবং শুক্রবার রাতে জট ছাড়ানোর একটা মরিয়া চেষ্টা মুখ্যমন্ত্রী চালালেন ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশন প্রদীপ মিত্রের মাধ্যমে জুনিয়র ডাক্তারদের চারজনকে নবান্নে ডেকে আলোচনা করতে চেয়ে। কিন্তু চিড়ে ভিজল না, রফাসূত্রের খোঁজে নবান্নয় গিয়ে আলোচনার প্রস্তাব সটান প্রত্যাখ্যান করলেন ডাক্তাররা। তার ওপর প্রদীপবাবুকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখালেন তাঁরা। উঠল "ডিএমই হায় হায়" ধ্বনি।
এনআরএস কাণ্ডের জেরে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশন জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে। চারজনকে নবান্নে ডেকে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু চিড়ে ভিজল না, প্রস্তাব সটান প্রত্যাখ্যান করলেন ডাক্তাররা। ডিএমই-কে ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখালেন তাঁরা। pic.twitter.com/u8xXzoJ135
— IE Bangla (@ieBangla) June 14, 2019
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, জট যে তিমিরে ছিল, রয়ে গেল সেই তিমিরেই। নবান্ন নয়, আসতে হলে, আলোচনা করতে হলে আসতে হবে এনআরএস-এই, জুনিয়র ডাক্তাররা এই দাবিতে অনড় থাকায় ঘোরতর চাপ বাড়ল মুখ্যমন্ত্রীর উপর। এনআরএস-এ কি শেষ পর্যন্ত যেতে বাধ্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী? বলা কঠিন, তবে মমতা নিজে না গেলে সমাধানসূত্র মেলার সম্ভাবনা যে সুদূরপরাহত, সেটা ক্রমশ স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার মিলিয়ে প্রতীকী ইস্তফা দিলেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ১০৪ জন চিকিৎসক। এদিন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রায় ৮০ জন সিনিয়র ডাক্তারও ইস্তফা দিয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেরও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন এনআরএস-এর অধ্যক্ষ এবং সুপার। উল্লেখ্য, এনআরএস-এর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হুঁশিয়ারির পরই বৃহস্পতিবার থেকে গণ-ইস্তফা দিতে শুরু করেন চিকিৎসকরা, যদিও প্রক্রিয়াগত কারণে কোনও ইস্তফাই সম্ভবত গৃহীত হবে না।