ফ্ল্যাট প্রতারণা কাণ্ডে এবার অভিনেত্রী তথা বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার নামে একটি সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন নুসরত। অভিযোগ, ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন নুসরত। এছাড়াও ওই প্রতারণার টাকাতেই দক্ষিণ কলকাতায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছিলেন সাংসদ। গত মাসে বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে শোরগোল ফেলে দেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডা। ইডি-কেও লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয়। তৎপর কেন্দ্রী॥য় এজেন্সি। আগামী মঙ্গলবার নুসরত জাহানকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলেছে ইডি। পাশাপাশি ডাকা হয়েছে সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার কর্তা রাকেশ সিংকেও।
নুসরত অবশ্য আগেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, 'আমি কোনও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত নই।' নিজের সপক্ষে সব নথি ও প্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে বলে ঘোষণা করেছিলেন এই অভিঅনেত্রী-সাংসদ।
২০১১ সালে সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার গঠিত হয়। শুরু থেকে ২০১৪ সালের মাঝামাধি পর্যন্ত এই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন নুসরত জাহান।
আরও পড়ুন- ‘নির্দোষ’ দাবি, তবুও কেন নুসরত জাহানের বক্তব্যে একাধিক প্রশ্ন?
অভিযোগ, ২০১৪-১৫ সালে চার'শো-র বেশি প্রবীণ নাগরিক সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে একটি সংস্থায় অর্থ জমা করেছিলেন। বদলে তাঁদের এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বছরের পর বছর ঘুরলেও সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফ্ল্যাট মেলেনি। টাকাও ফেরত পাননি বলে অভিযোগ। নুসরত ওই অর্থ জমাকারী সংস্থার ‘অন্যতম ডিরেক্টর’ বলে দাবি বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডার।
বিজেপি নেতার দাবি, এ প্রতারণার বিষয়টি পুলিশ জানিয়ে কাজের কাজ হয়নি। সাংসদ নুসরতের বিরুদ্ধেও আদালতে প্রতারণার মামলা হয়েছিল। কিন্তু আদালতের শমন পেয়েও নুসরত জাহান হাজিরা দেননি বলে অভিযোগ। তাই প্রতারিতরা ইডি-র কাছেই অভিযোগ জানিয়েঠেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পরে দাবি করেন, ওই ‘প্রতারণার’ অর্থেই পাম অ্যাভিনিউতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন নুসরত।
শোরগোলের মধ্যেই গত মাসে নুসরতের কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছিলেন যে, সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি। সেই ঋণ সুদ-সহ ফিরিয়েও দিয়েছেন। ওই সংস্থার সঙ্গে আর তাঁর আর কোনও যোগাযোগ নেই। তবে, এর বাইরে আর কোনও প্রশ্নের জবাবই সেদিন সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট করতে রাজি হননি তৃণমূল সাংসদ।