ধান রোয়ার কাজে ভিনরাজ্যে যাচ্ছিলেন তিন ভাই। আর সেই যাত্রাই কালযাত্রা হল গায়েন পরিবারের। বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামের একই পরিবারের তিন ভাইয়ের প্রাণ কাড়ল করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা। একধাক্কায় পরিবার ছারখার। ওই গ্রামেরই আরও দুজন প্রাণ হারিয়েছেন এই রেল দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার সেই ছড়ানেখালি গ্রামে গেলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
Advertisment
বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামের গায়েন পরিবারের তিন ভাই হারান, নিশিকান্ত ও দিবাকর ধান রোয়ার কাজে অন্ধ্রপ্রদেশ যাচ্ছিলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়। পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর, মঙ্গলবার ছড়ানেখালি গ্রামে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এই গ্রামের আরও ২ জনের। সকলের পরিবারের সঙ্গেই কথা বলেন রাজ্যপাল।
বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামে রবিবার এসে পৌঁছায় ৫ জনের মৃতদেহ। এঁদের মধ্যে ছিল তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েনের দেহ। ছিল বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদারের মৃতদেহও। বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ে একই গ্রামের এই ৫ জনের মৃত্যু হয়। ধান রোয়ার কাজে অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছিলেন এই পরিযায়ী শ্রমিকরা। ছড়ানেখালি গ্রামে স্বজনহারাদের হাহাকারের মাঝেই মঙ্গলবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল।
তাঁকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের মানুষ। শোকে পাথর গোটা গ্রামই। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই সময় ধান রোয়ার কাছে অন্ধ্রপ্রদেশ যান অনেকে। তাঁদের রোজগারের টাকায় চলে সংসারগুলো। এক মুহূর্তে ঘটে যাওয়া এই বিভীষিকা এতগুলো পরিবারের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ওড়িশার কটক এবং ভূবনেশ্বরের হাসপাতালে এখনও শতাধিক বাংলার যাত্রীর দেহ পড়ে রয়েছে। শতাধিক দেহের শনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি। দেহগুলি যাতে শনাক্ত করা যায় এবং সেগুলি বাংলায় ফেরত আনা যায় সেই ব্যবস্থা করতে মঙ্গলবার ফের ওড়িশায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কটক এবং ভুবনেশ্বর এইমসে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী।