হাতে গোনা আর মাত্র একটা দিন, তারপরই দেশের স্বাধীনতা দিবস। নিরাপত্তার কড়া চাদরে মুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে কলকাতা থেকে দিল্লির লালকেল্লা। এবারের স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার বুকে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করতে চলেছেন বাংলার পটশিল্পীরা।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে দিল্লি লালকেল্লা। এখানেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার স্বাধীনতা দিবসের সেরা আকর্ষণ লালকেল্লার বুকে স্থান পেতে চলেছে বাংলার ঐতিহাসিক পটচিত্র। লোকসংস্কৃতির বহু পুরনো রীতি পটচিত্র অঙ্কন। এই পটচিত্রে নানা ধরনের গল্প লম্বা লম্বা গোটানো কাগজের ক্যানভাসের উপর নানা বর্ণে আঁকা থাকে। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার জয়ী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুরের শিল্পী বিশিষ্ট চিত্রকর নুরুদ্দিন সম্প্রতি ক্যানভাসে ১০০০ স্কোয়ার ফুটের দুর্গা ফুটিয়ে তুলে গ্রামে ফিরেছেন। সঙ্গ দিয়েছেন স্ত্রী কল্পনা চিত্রকর। কল্পনা ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার জেতেন। সেই সঙ্গে গ্রামের মোট আট জনের একটি দল নিরলস চেষ্টায় ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলার এই প্রাচীন শিল্পকলা।
মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই পটচিত্রের হাতেখড়ি। তারপর রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন একের পর এক চোখধাঁধানো শিল্পকর্ম। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লায় স্থান পেতে চলেছে বাংলার শিল্পীদের আঁকা পটচিত্র। আঁকার সুযোগ পেয়ে বেজায় উচ্ছ্বসিত শিল্পী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শিল্পী জানিয়েছেন, “স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রথম বারের মত লালকেল্লায় স্থান পেতে চলেছে বাংলার পটশিল্প। আমরা ১৯ শে জুলাই থেকে ক্যানভাসে শিল্পকর্ম তৈরির কাজ শুরু করি। ১ লা অগাস্ট তা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমাদের এই শিল্পকলা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে। এটা আমাদের গ্রামের বিশেষ করে বাংলার মানুষের জন্য এক বড় আনন্দের মুহূর্ত। তিন দশকের বেশি সময় এই পেশায় থাকলেও লালকেল্লায় বাংলার পটশিল্পকে তুলে ধরা এক অন্যরকম অনুভূতি”।
শিল্পীর এক কাছের মানুষ গ্রামেরই শিক্ষক প্রতীক জানা এপ্রসঙ্গে বলেছেন, “আগামী ১৫ আগষ্ট, চন্ডীপুর ব্লক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটচিত্র শিল্পের ইতিহাসে এক আনন্দময় ও গর্বের দিন। আমাদের প্রিয় পটচিত্র শিল্পী দম্পতির সৌজন্যে দিল্লির লালকেল্লা গেট সজ্জিত হবে বাংলার পটচিত্রে। ওনাদের অনেক শুভেচ্ছা ও বাংলার মুখ উজ্জ্বল করার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই” ।