Bengal STF Arrested Terrorist : জঙ্গি সন্দেহে এটিএফের হাতে গ্রেফতার হল বাংলার আরও এক যুবক । ধৃতের নাম আনোয়ার শেখ । ২৮ বছর বয়সী এই যুবকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামে হলেও সে চেন্নইয়ে থাকতে । সেখান থেকেই বেঙ্গল এসটিএস তাকে গ্রেফতার করেছে। হাতে গোনা কয়েক দিন আগে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসার উল ইসলামের 'সাহাদাত' মডিউলের খোঁজ পাায় এসটিএফ। আর এবার জঙ্গি সন্দেহে মঙ্গকোটের যুবক গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তোলপাড় ফেলে দিয়েছ।
বেঙ্গল এসটিএফ শুক্রবার চেন্নাইয়ের ভিরুগামবাক্কম এলাকা থেকে আনোয়ার শেখকে গ্রেফতার করে। ওই দিনই আনোয়ারকে চেন্নাই আদালতে পেশ করে এসটিএফ। ট্রানজিট রিমাণ্ডে নিয়ে এসটিএফ শনিবার তাকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে । আদালত আনোয়ারকে ১৪ দিনের এস টি এফ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
২০২০ সাল থেকে হোয়াটস্যাপে এবং ব্লগের মাধ্যমে কোনও এক যুবকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা আনোয়ার জেহাদি হয়। এমনটাই এসটিএফ জানতে পেরেছে বলে জানা গিয়েছে। এসিটিএফের আনোয়ার শেখ কে নিয়ে সন্দেহ জাগার নেপথ্যে যে কারণ রয়েছে সেটাও যথেষ্ট চমকে দেওয়ার মতো । জানাযাচ্ছে,পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থেকে গমহম্মদ হাবিবুল্লাকে গ্রেফতারের পরে হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয় হাবিবুল্লার এক সঙ্গীকে। আর হাবিবুল্লা গ্রেফতার হতেই আনোয়ার চেন্নাই পালিয়ে যায়।
মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম কুলসোনা। সেখানকার ঢালাইপাড়ায় অ্যাসবেসটস ছাউনির ভাঙাচোরা একটি ঘরে তিন নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন স্ত্রী রেজিনা বিবি। সেই বাড়িতে এদিন পৌছানো হলে রেজিনা জানান,'উপার্জনের জন্য তাঁর স্বামী চেন্নাই থাকেন' । শুক্রবার বিকেল নাগাদ তিনি ফোনে খবর পান তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রেজিনা বলেন," পরে জানতে পারি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে তাঁর স্বামীকে ধরা হয়েছে। রেজিনা আরও বলেন ,'আমার স্বামী কখনই জঙ্গী দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। মিথ্য অভিযোগে আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে বলেও রেজিনা দাবি করেন'।
আরও পড়ুন : < Salt lake Lynching: বউবাজারের পর সল্টলেক! ফের শহরের বুকে ‘পিটিয়ে খুন’, চূড়ান্ত চাঞ্চল্যে প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা >
এলাকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে, আনোয়ার শেখরা তিন ভাই ,পাঁচ বোন। প্রায় ২০ বছর আগে তাঁদের মা মারা যান। তারপর বাবা আনিসুর রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। বিধবা নিঃসন্তান মাসি জাবিদা বিবি কুলসোনা গ্রামেই রয়ে যান। আনোয়ার ও তার অন্য ভাই বোনের দায়িত্ব তিনিই নেন। জাবিদা বিবি এদিন চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন,," আমরা খুব গরিব ঘরের মানুষ। লোকের কাছে চেয়ে-চিন্তে আনোয়ার ও তার ভাই বোনকে বড় করেছি। এখন ওরা খেটে খায়। ওরা কেউ জঙ্গি হতে পারে না।"
জানা গিয়েছে, তিন ভাইয়ের মধ্যে মেজ আনোয়ার শেখ। বড়দাদা আলিম শেখ মোটরভ্যান চালান। ছোট ভাই সেলিম চেন্নাইয়ে একটি চামড়ার কারখানায় কাজ করেন। আনোয়ার আগে উত্তরপ্রদেশে কাজ করতো। পরে সে চেন্নাই চলে যায়। সেখানে একটি লণ্ড্রিতে কাজ করতো। গ্রামবাসী মিরাজ শেখ ,সাইদুর রহমানরা বলেন," আনোয়ার নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। অমন ছেলে জঙ্গি হতে পারে না। কোন ভুল হচ্ছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে'।