প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল! মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মোট ২৭২ জন। ছাত্রদের পাশের হার ৯০.১৯ শতাংশ। অন্যদিকে ছাত্রীরা সামান্য পিছিয়ে ছাত্রদের তুলনায়। তাদের পাশের হার ৮৬. ৯৮ শতাংশ। ৪৯৮ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটার অদিশা দেবশর্মা।
ভবিষ্যতে পথ শিশুদের জন্য কাজ করতে চান এই বঙ্গ তনয়া। এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে সম্ভাব্য প্রথম দিনহাটার অদিশা। দিনহাটার সোনিদেবী জৈন স্কুলের ছাত্রী অদিশা দেবশর্মা। অদিশার বাবা তপন দেবশর্মা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক, মা স্বাস্থ্যবিভাগে কর্মরতা। মাধ্যমিকেও তাক লাগানো ফল করেছিলেন এই তরুণী। ৬৭৮ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধাতালিকায় নাম তুলেছিলেন অদিশা।
কোভিড -১৯ মহামারী শিক্ষার ক্ষেত্রে কতবড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিল এই প্রশ্নের উত্তরে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অদিশা বলেন, “অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থা আমাদের বিদ্যাঅর্জনের পথকে আর ও মসৃণ করেছে।পরিস্থিতি অনুসারে স্কুল অনলাইন ক্লাসে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে তাদের তরফে সেরাটা দেওয়ার। আমরাও অনলাইন ক্লাসে দারুণ ভাবে উপকৃত তবে অফলাইন ক্লাসের সুযোগ থাকলে হয়তো ফলাফল কিছুটা ভাল হতে পারত”।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সায়নদীপ সামন্ত ৪৯৭ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার জলচক নটেশ্বরী বিদ্যায়তনের ছাত্র সায়নদ্বীপ। এছাড়া স্কুলের আরও একঝাঁক কৃতি উঠে এসেছে প্রথম দশের মেধা তালিকায়। স্বভাবতই খুশির জোয়ার নেমেছে জলচক নটেশ্বরী বিদ্যায়তনের ছাত্র থেকে শিক্ষকদের মধ্যে। কাটোয়ার কাশিরাম নাথ বিদ্যায়তনের ছাত্র অভিক দাস। বাবা শিক্ষক, মা গৃহবধূ।
আরও পড়ুন:‘উন্মাদ মুসলিমদের দেখে নবীও অবাক হতেন’, বিক্ষোভ ইস্যুতে মন্তব্য তসলিমার
অভীকের কথায়, ‘মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকে আবারও স্থান করতে পেরেছি তাতে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। মাধ্যমিকে স্ট্যান্ড করার পর উচ্চ মাধ্যমিকে আরও বেশি পরিশ্রম করেছি। ফলে মনে করি যা সিলেবাস সেই অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে পড়াশোনা করলে নিশ্চয়ই ভাল রেজাল্ট হবে।টেক্সট বইগুলোতে খুঁটিয়ে পড়তাম।
কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের ছাত্র অভিকের ইচ্ছে বড় হয়ে ডাক্তার হবেন। মানুষের সেবা করবেন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক সাহায্য করেছে।তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য”। হুগলী কলেজিয়েট স্কুলের সোহম দাস এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫০০ তে ৪৯৬। প্রথম স্থানাধিকারীর চেয়ে মাত্র ২ নম্বর কম পেয়েছেন সোহম। দিনে এমনিতে ১১-১২ ঘণ্টা পড়তেন সোহম। তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য আইআইটি দিল্লিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করা।
পাঠ্য বইকে ভালভাবে রপ্ত করেই সোহমের এই কৃতিত্ব। বাঁকুড়া গোয়েঙ্কা বিদ্যাতনের ছাত্র সোমনাথ পাল, তিনি এবারে উচ্চমাধ্যমিকে ৫০০ তে ৪৯৪ পেয়ে পঞ্চম হয়েছেন। বাবা শারীরিক ভাবে অসুস্থ। মা বিড়ি কারখানায় কাজ করেন। তিনি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, “ভবিষ্যতে এক জন শিক্ষক হতে চান তিনি। তিনি আরও বলেন, আমার পড়াশুনার জন্য বাবা-মা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আমার ফলাফলে আমি খুবই খুশি”।