সৈকত শহর দিঘাই রাজ্যের অন্যতম ডেস্টিনেশন। দিঘায় বাড়ছে পর্যটকের আনাগোনা। ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনাও। নথির অভাবে অনের সময়ই অপরাধের কিনারা করা যায় না। তাই এই পর্যটন শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর প্রশাসন। এবার দিঘার ৬০০টি হোটেল নিয়ে চালু হচ্ছে অনলাইন ডেটাবেস সিস্টেম।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে দিঘার সমস্ত হোটেলে চালু হতে চলেছে অনলাইন ইনফর্মেশন অ্যান্ড ডাটাবেস সিস্টেম। প্রাথমিকভাবে এই ডাটাবেস সিস্টেম চালু হবে দিঘার ৬০০টি হোটেলে। পরে ধাপে ধাপে শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণির হোটেলেও এভাবে তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত সহায়তা করছে এনআইসি (ন্যাশনাল ইনফরমেটিক সেন্টার)। ইতিমধ্যে দিঘার হোটেলগুলিকে চিঠি দিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ নিতে বলা হয়েছে।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল বলেন, 'অনলাইন ডাটাবেস সিস্টেম চালু হলে পর্যটকদের যাবতীয় তথ্য পোর্টালে আপলোড করে দিতে হবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের থেকে নেওয়া ফিও জমা করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমেই। ফলে রাজস্ব ফাঁকি যেমন দেওয়া যাবে না। তেমনই পর্যটকদের সুরক্ষার দিকটিও সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্রের কথায়, 'এই ধরনের ব্যবস্থা চালু হলে হোটেল মালিকদের হয়রানিও কমবে।' কিন্তু তাঁর সংশয়, 'বড় হোটেলগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু করা গেলেও মাঝারি বা ছোট হোটেলগুলিতে এখনই প্রযুক্তির ব্যবহার কতটা সম্ভব তা দেখতে হবে।' প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘায় পর্যটকরা এলে তাঁদের একটা ফি দিতে হয়। মূলত পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও পরিষেবা বাবদ এই টাকা নেয় হোটেল। পরে তারা তা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে দেওয়া হয়।
অনেক সময়ই অভিযোগ উঠেছে যে, বহু হোটেল পর্যটকদের কাছ থেকে রাজস্ববাবদ নেওয়া টাকা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে জনা করে না। এতেই লোকসানের মুখে পড়তে হয় পর্ষদকে। তাই এবার একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে কর আদায় করতে মরিয়া পর্ষদ। দিঘায় পর্যটকের আনাগোনা বাড়লে ৫/৬ কোটি টাকার কর আদায় হওয়ার কথা কিন্তু সেই কর আদায়ের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে মাত্র এক থেকে দেড় কোটি টাকা। নয়া প্রযুক্তির ফলে সৈকত শহরে আসা পর্যটকের সংখ্যা যেমন বোঝা যাবে, তেমনি কোনও পর্যটক বিপদে পড়লে তার তথ্য সহজেই মিলবে।সম্প্রতি দিঘায় জলে ডুবে মৃত্যু, হোটেল থেকে দেহ উদ্ধার, চুরি ছিনতাই এর মতো ঘটনা ঘটছে। ফলে পুলিশ প্রশাসনকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই সিস্টেম চালু হলে তাঅনেকটাই দূর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।