Modi On Operation Sindoor: অপারেশন ‘সিন্দুর’-এর মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করল ভারতীয় সেনা। আর সেই সাফল্যের জন্য ভারতীয় সেনাকে স্যালুট জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরই এই পাল্টা অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গতকাল সন্ধ্যায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সাফ জানিয়ে দেন, “দেশের নিরপরাধ পর্যটকদের তাদের পরিবারের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গোটা দেশ তখন গর্জে উঠেছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা শপথ নিয়েছিলাম সন্ত্রাসকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার। অপারেশন সিন্দুর সেই শপথ পূরণ করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, “এই অপারেশন শুধুমাত্র একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়, কোটি কোটি ভারতীয়র আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। তাদের সাহসিকতা ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গিয়েছে।”
ভারতীয় বাহিনীর নির্ভুল ড্রোন ও মিসাইল হামলায় পাকিস্তানে শতাধিক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। যারা এতদিন অবাধে পাকিস্তানের মাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তাদের ধ্বংস করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী আরও বলেন, 'অপারেশনের প্রথম তিন দিনেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানিয়ে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMO)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে'।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আত্মনির্ভর ভারতের প্রশংসা করে বলেন, “পাকিস্তান স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি ভারত এত বড় আঘাত হানতে পারে। ড্রোন, মিসাইল যেগুলি পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়েছিল তার বেশিরভাগই ছিল 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ডিফেন্স সিস্টেম। গোটা বিশ্ব ভারতীয় প্রযুক্তির নির্ভুলতা ও শক্তি দেখে অবাক হয়েছে ।” কঠোর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “আজকের বিশ্ব যুদ্ধের নয়, সন্ত্রাসেরও নয়। আর ভারতের মুখে নয়, হাতে জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।”
🔴 প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের ১০টি বড় বার্তা
১. অপারেশন সিঁদুর – সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন নীতি
প্রধানমন্ত্রী জানান, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ও এয়ার স্ট্রাইকের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে – সন্ত্রাসবাদকে কোনভাবেই সহ্য করা হবে না।
২. সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিজের শর্তে জবাব
ভারত যদি আক্রান্ত হয়, তবে দেশ নিজের শর্তে এবং নিজের উপায়ে জবাব দেবে, এমনটাই জানিয়েছেন মোদী।
৩. পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল মানবে না ভারত
ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল মেনে নেবে না, বরং নির্ভুলভাবে আঘাত হানবে।
৪. সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতাদেরও নিশানা করা হবে
সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে কোন রকমের পার্থক্য করা হবে না। প্রত্যেককে উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে।
৫. "জল আর রক্ত একসাথে বইতে পারে না"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও বাণিজ্য একসাথে চলতে পারে না। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে।
৬. ভারতের সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত
তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের তিনটি সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে সতর্ক এবং অপারেশন সিঁদুর তার বাস্তব উদাহরণ।
৭. পাকিস্তানের কুৎসিত মুখোশ উন্মোচন
পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা জঙ্গিদের শেষ বিদায়ে উপস্থিত থেকে বিশ্বকে তাদের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে।
৮. ১০০-র বেশি সন্ত্রাসী নিহত
অপারেশন সিঁদুরের সময় ১০০-র বেশি জঙ্গিকে নির্মূল করা হয়েছে। বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকের মতো স্থানগুলো সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছিল।
৯. ২২ এপ্রিলের ঘটনার প্রতিক্রিয়া
কাশ্মীরে পাহেলগাঁওয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, গোটা দেশ এক সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়।
১০. অপারেশন সিঁদুর – জাতীয় আবেগের প্রতিফলন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়, এটি লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র আবেগ ও ন্যায়বিচারের প্রতীক।