বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নয়
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে আর বেসরকারি হাসপাতালে হাড়ের অস্ত্রোপচার করানো যাবে না। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে হাড়ের যে কোনও সমস্যায় অস্ত্রোপচার করাতে হবে শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালেই। নতুন নির্দেশিকায় জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে পথ দুর্ঘটনায় আহতদের হাড়ের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকরী নয়। জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার স্বাক্ষর করা এই নির্দেশিকা বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কখন এই নিয়মে ছাড়?
সরকারি হাসপাতালে অর্থোপেডিক চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকলে, তবেই বেসরকারি হাসপাতালে রোগীকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে অস্ত্রোপচারের জন্য রেফার করা যাবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে রেফারাল সার্টিফিকেট নিয়েই বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হবে।
কেন এই নিয়ম?
গত কয়েক বছরে সব জেলা এবং মহকুমা হাসপাতালেই অর্থপেডিক অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন ঘটানো হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের দাবি। ফলে রাজ্য সরকার মনে করছে- হাড়ের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে বেসরকারি নয়, সরকারি হাসপাতালেই সকলের চিকিৎসা সম্ভব। এছাড়া, এই নিয়মের ফলে সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোর উপযুক্ত ব্যবহার, দুর্নীতি এবং বেনিয়ম ঠেকানো সম্ভব।
সরকারি সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে সরকারি হাসপাতাল থেকে অর্থপেডিক রোগীদের বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে রেফারের ঘটনা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। তাদের সবাইকে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। যা দেখেই টনক নড়ে নবান্নের। এই দুই জেলায় গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে হাড়ের চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার বন্ধ করা হয়েছিল। এবার এই নিয়ম রাজ্যব্যাপী জারি হচ্ছে।
শুভেন্দুর কটাক্ষ
স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে সরকারি নির্দেশিকার সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা। এক্সবার্তায় শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, 'ভোটের আগে বলেছিলেন স্বাস্থ্য সাথী হলো বিশ্ব মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা, বেসরকারি হাসপাতালে কার্ড গ্রহণ করতেই হবে, না হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল। ভোট শেষ, দেখলেন ভাঁড়ে মা ভবানী। অমনি নির্দেশিকা বদল, এবার বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিলে সেই হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ! অবশ্য এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, যে রাজ্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ভুল চিকিৎসা হয়, সেখানে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে এই টুকু দুর্ভোগ তো অতি সামান্য ব্যাপার।'