রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় ফের নির্বাচন কমিশনকে ধাক্কা কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘রায় প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হলে পদ ছাড়ুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার, সেই জায়গায় নতুন কমিশনর নিয়োগ করবে রাজ্যপাল’।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যোগ্যতা নিয়ে এবার সরাসরি প্রশ্ন। আদালতে পর পর ধাক্কা তাও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে অনীহা কমিশনের? ১৩ দিনে ইতিমধ্যেই আটজনের প্রাণ গিয়েছে। তাও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অনিহা কমিশনের এবার সেই নিয়ে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে তোপ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে ২০১৩ এর চেয়েও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হয়নি বলে তোপ রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে হবে কমিশনকে, কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিনের মামলার শুনানি চলাকালীন কমিশনের কোন আধিকারিক না থাকায় প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত। এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ, ‘আদালতের আদেশ বাস্তবায়িত করতে না পারলে পদ ছাড়ুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহা’।
এবারের পঞ্চায়েত ভোটে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নয় বরং ২০১৩ সালের চেয়েও বেশি বাহিনী দিয়ে ভোট করতে হবে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ৮২৫ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ভোট হয়েছিল। সেবার ৫ দফায় ভোটপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালের একদফায় পঞ্চায়েত ভোটে আরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কমিশনকে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: < নজরদারিতে জোর, ‘স্পর্শকাতর’ জেলায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী, কীসের বার্তা কমিশনের? >
একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না কমিশনের স্বতন্ত্রতা কী হল ১৭০০ না আট লক্ষ বাহিনী তা কী দেখা আদালতের কাজ? আমাদের কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারলে পদ ছাড়ুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার”।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন বিরোধীদের একাংশ। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা বলেন, ‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, অশান্তির জন্য যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া উচিত কমিশনের’।