মঞ্চে হাজির তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা। তার মধ্যেই টাকা উড়িয়ে নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে চলছে চটুল নাচ। তা-ও আবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পঞ্চায়েত সভাপতির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। এরকমই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ব্যাপক বিতর্ক ছড়িয়েছে মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের শোভাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এনিয়ে সমাজের বিভিন্ন মহল এলাকার পঞ্চায়েত সভাপতি-সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছেন।
রাজ্যে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের একের পর এক হেভিওয়েট নেতা এখন কাঠগড়ায়। তার মধ্যে দেদার টাকা উড়িয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গ্রামে এই অশ্লীল নাচের আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছে শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি আনোয়ারুল হকের বিরুদ্ধে। অনুষ্ঠানে দেখা যায়, মঞ্চে স্বল্পবসনা নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ গানের তালে কোমর দোলাচ্ছেন পঞ্চায়েত সভাপতি। শুধু কোমর দোলানোই নয়, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মুম্বইয়ের কায়দায় ওই মহিলা নৃত্যশিল্পীর ওপর হাজার হাজার টাকা ওড়াচ্ছেন তিনি।
আর সেই দৃশ্য উপভোগ করছেন মঞ্চের নীচে থাকা কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। এই ভিডিও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। আর, পড়তেই শুরু হয় নিন্দার ঝড়। প্রবল সমালোচনা শুরু হতেই পঞ্চায়েত সভাপতি আনোয়ারুল হক নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উত্তাল রায়না, প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পথ অবরোধ
গণমাধ্যমে এই চুটুল নাচের ভিডিও ভাইরাল হওয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেন, 'স্বাধীনতা দিবস বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনে এমন ধরনের চটুল নাচের আসর বসানো মেনে নেওয়া যায় না। এই অপসংস্কৃতির তীব্র নিন্দা করছি।' জেলা সভাপতিকেও এই ঘটনা সম্পর্কে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপির মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি। তিনি বলেন, 'রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন রাজ্যের সংস্কৃতি বাঁচাতে হবে। আর তাঁরই দলের পঞ্চায়েত সভাপতিরা গ্রামে চটুল নাচের আসর বসাচ্ছেন। এটা তৃণমূলের কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল নেতারা বুঝে উঠতে পারছেন না, তাঁদের অসাধু উপায়ে কামানো টাকা কীভাবে খরচা করবেন। তাই এই ধরনের চটুল নাচের আসর বসিয়ে তাঁরা টাকা ওড়াচ্ছেন।'