বাড়িতে দুষ্টুমি করতো ৯ বছরের ছোট্ট একটি শিশু। সেটা নেহাতই ছিল শিশুসুলভ চপলতা! তবে একরত্তির এহেন দুষ্টুমি বাগে আনতে বাবা-মা যা করল, তা কার্যত বিরলই বলা চলে। এক সাধুর পরামর্শে শিশুটির বাবা-মার এমন কীর্তি জোর চর্চায়।
শিশুটির দুষ্টুমী বন্ধে কী এমন করেছিল তার বাবা-মা?
নিঝুম রাতে শিশুটিকে নির্জন দামোদরের চড়ে ছেড়ে এসেছিল তারই বাবা-মা ও দাদু। অচেনা জায়গায় অন্ধকারে বাবা-মাকে খুঁজে না পেয়ে তারস্বরে চিৎকার শুরু করে একরত্তি বাচ্চাটি। দামোদরের চরে দিশাহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতে থাকে সে। বাবা-মাকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে শিশুটি। তার কান্নার শব্দ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাই ছুটে আসেন। তাঁরাই শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে হোমে পাঠানো হয়েছে তাকে। এমন অমানবিক আচরণের জন্য ইতিমধ্যেই শিশুটির বাবা-মা ও দাদুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শিশুটির দাদুর বাড়ি বর্ধমানের মেমারি থানার পালশিটে। নদিয়ার চাকদার নরেন্দ্রপল্লির কদমতলায় থাকে শিশুটির বাবা-মা।
রায়নার সুদর্শনপুরের এক সাধুর আশ্রম থেকে শিশুটির বাবা ও মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ওই আশ্রম লাগোয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় শিশুটির দাদুকেও। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শিশু নির্যাতন ও জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে থানা। আদালতে তোলা হলে ধৃত ২ জনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বয়সের কথা বিবেচনা করে ডাকামাত্র তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরা ও তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতার শর্তে শিশুটির ৭২ বছরের বৃদ্ধ দাদুর জামিন মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
আরও পড়ুন- “মমতা-অভিষেক সব জানেন’, ফাঁসলেন কীভাবে? রাখঢাক উড়িয়ে সাফ কথা বালুর
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আর পাঁচটি শিশুর মতোই এই শিশুটিও বাড়িতে দুষ্টুমি করতো। এর আগে শিশুটি দু’বার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে সুদর্শনপুরের আশ্রমের সাধুর কাছে নিয়ে গিয়েছিল তার বাবা-মা। তাঁদের বিশ্বাস, সাধুর কৃপায় তাঁদের ছেলে সুস্থ হয়েছে। এবার দুষ্টুমি বন্ধ করতে শিশুটিকে ফের ওই সাধুর কাছেই নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। সেই মতো সাধুর পরামর্শে শিশুটির দুষ্টুমি বন্ধে তাকে দামোদরের পাড়ে নির্জন জায়গায় ছেড়ে আসে তার বাবা-মা।
আরও পড়ুন- সরকারি চাকরির পরীক্ষা: অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়ে জ্ঞান হারানোর জোগাড় যুবকের!
শিশুটিকে একা ছেড়ে দিয়ে তার বাবা-মা আশ্রমে চলে যায়। বাবা-মার খোঁজে উদ্ভ্রান্তের মতো এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াতে থাকে বাচ্চাটি। তার কান্নার শব্দে ছুটে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে হোমে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে। গ্রেফতার কার হয় শিশুটির পরিবারের সদস্যদের।