মাস খানেক বাদেই ছিল বিয়ে। রোজকার মতো আজও অফিসে বেরিয়ে ছিলেন। কে জানত আর ফিরবেন না রিমা সিং। হাওড়ার দাশনগরের ফকির মিস্ত্রি বাগানের বাসিন্দা রিমা শুক্রবার দুপুরে পার্ক সার্কাসে কলকাতা পুলিশের আর্মড পুলিশ ফোর্সের কর্মী চোড়ুপ লেপচার গুলিতে মারা যান। মেয়ের মৃত্যুর খবরে পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে।
এদিন বেলা ১২টা নাগাদ অফিসের জন্য বেরিয়ে ছিলেন রিমা। মাকে বলেছিলেন, সন্ধেয় ফিরবেন। কিন্তু এই যাওয়াই শেষ যাওয়া হয়ে গেল রিমার। বাড়িওয়ালার কাছ থেকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পান রিমার মা। তিনি জানান, মাস খানেক বাদেই বিয়ের দিন স্থির হয়েছিল রিমার। আজ সেই নিয়ে কথা বলতে বাড়িতে আসেন হবু জামাই প্রবীর রায়। কিন্তু শেষ দেখা হল না।
পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন রিমা। বাবার কারখানা পাঁচ বছর ধরে বন্ধ। বাবা-মা এবং এক ভাই, মোট চারজনের সংসার একাই টানতেন রিমা। কী ভাবে সব কিছু শেষ হয়ে গেল ভাবতে পারছেন না রিমার মা। সংসারের হাল ধরতে বেসরকারি সংস্থায় কাজ নেন রিমা।
আরও পড়ুন ভরদুপুরে পার্ক সার্কাসে এলোপাথাড়ি গুলি, পুলিশকর্মী-সহ মৃত্যু মহিলার
এদিন দুপুরে অফিসের কাজে পার্ক সার্কাস এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। অ্যাপ বাইকে সওয়ার হয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে আচমকা কনস্টেবল লেপচার রাইফেল থেকে ছোড়া গুলি এসে লাগে রিমার মাথার পিছনে। সেখানে বাইক থেকে উল্টে পড়ে যান রিমা। রাস্তা রক্তে ভেসে যায়। এদিকে, গুলির আওয়াজ পেয়ে বাইক চালক পালিয়ে যান।
হাসপাতালে নিয়ে গেলে রিমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রিমা ছাড়াও কনস্টেবলের গুলিতে আহত হয়েছেন কলিন স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ বশির আলম নোমানি। তাঁর ডান হাতে গুলি লাগে। তিনি এখন স্থিতিশীল। মেয়েকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছে রিমার পরিবার। হাসতে হাসতে যে মেয়েটা বাড়ি থেকে গেল, তাঁর মৃতদেহ দেখতে হবে এ কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি পরিজনরা।